বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরীর বিচারের নথিপত্র চেয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।
মঙ্গলবার ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলসের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এই তথ্য জানান।
রাশেদ চৌধুরীর বিষয়টি তিনি বৈঠকে তুলেছিলেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমি বলেছি, আমরা আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। কিন্তু আমাদের একটি সমস্যা আছে, রাশেদ চৌধুরী আপনাদের দেশে লুকিয়ে আছে। আমরা তাকে ফেরত চাই।
“জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বিচারের নথিপত্র দেন। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব এবং তারপর আপনাদের জানাব।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই প্রথম এই বিচার প্রক্রিয়ার বিস্তারিত নথিপত্র চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
( রাশেদ চৌধুরী )
খুনি রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যার্পণ চেয়ে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করা হয়। সে সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মধ্য দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা ছাড়া পেয়ে যায়।
২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ খোলে। তখন বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিচারের গতি শ্লথ হয়ে যায়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিচার শেষে ২০১০ সালে পাঁচ খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে দণ্ডিত ছয় খুনি এখনও বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছেন, তাদের একজন রাশেদ চৌধুরী আছেন যুক্তরাষ্ট্রে।
বৈঠকে রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তর ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট এবং ট্রাম্প প্রশাসনের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন।