জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে আজ ৯ জানুয়ারি, শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব কনফারেন্স লাউঞ্জ (জহুর হোসেন চৌধুরী হল), ঢাকায় “আমাদের মহান স্বাধীনতা পরিপূর্ণতা লাভ করে” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ পরিচালনা পরিষদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তী মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ পরিচালনা কমিটির সদস্য মতিউর রহমান লাল্টু’র সঞ্চালনায় উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন- মুহাম্মদ শফিকুর রহমান এমপি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ পরিচালনা পরিষদ সদস্য ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, আব্দুল মতিন ভূইয়া, ড. লিয়াকত হোসনে মোড়ল, খন্দকার নজরুল ইসলাম, এ,এফ,এম লুৎফুর রহমান, প্রকৌশলী মাঈনুর রহমান, ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম, অজিত সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ব বিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোস্তফা সারোয়ারসহ বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয়, মহানগর নেতৃবৃন্দ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মোঃ শফিকুর রহমান এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তিনি তার সেই ওয়াদা রক্ষা করেছেন। বাংলাদেশ এবার স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ভারত সরকার ও সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া) সামরিক সহায়তা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর ৯০ ভাগ অবদান রয়েছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ বিজয় অর্জন ও জীবন্ত বঙ্গবন্ধুকে দেশে ফিরিয়ে আনা। তিনি ৩৭টি দেশ সফর করেছেন বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেওয়া ও বঙ্গবন্ধুকে স্ব সম্মানে বাংলাদেশে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে।
ডা. আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ১০ই জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস বাঙালি জাতির ইতিহাসে গৌরব ও সম্মানের একটি দিন। ঐদিন জাতির পিতা তার স্বাধীন সার্বভৌম দেশে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আমাদের মহান স্বাধীনতা সুসংহত হয়। তিনি যদি ফিরে না আসতেন তাহলে আমাদের স্বাধীনতার পরিপূর্ণতা কোনদিনই আসতো না। তিনি ফিরে এসেছেন বলেই বাংলাদেশ আজ মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
ড. লিয়াকত হোসেন মোড়ল বলেন, বঙ্গবন্ধুর জাতীয়তাবাদী চেতনা আমাদের চিরদিন অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। তার সাহসী ও দুরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে একটি শক্তিশালী ও সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। এ বিজয় লাভ করা অতি সহজ ছিলনা। শুধু বাঙালির দেশপ্রেম ও বঙ্গবন্ধুর সঠিক নেতৃত্ব ছিল বলেই এটা সম্ভবপর হয়েছে।
আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি অনেক ক্ষেত্রে সফলতা এনেছেন। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। অজিত সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও ১৭ মে ১৯৮১ সালের জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মিল খুজে পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আমাদের স্বাধীনতা পরিপূর্ণতা পেয়েছে আর শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে প্রতি বিপ্লবের ধারায় পরিচালিত এই দেশ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় ফিরে এসেছে। বঙ্গবন্ধু ফিরে না আসলে যেমন আমাদের স্বাধীনতা পরিপূর্ণতা পেতো না, ঠিক তেমনই শেখ হাসিনা ফিরে না আসলে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাত থেকে কোন দিনই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আসতো না।
সভাপতির বক্তব্যে মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, বাঙালি জাতি যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে, সেই প্রত্যাশা আজও পূরণ হয়নি। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের মাধ্যমে সেই আশা ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। আমাদের পরম সৌভাগ্য বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেঁচে আছেন বলেই ও রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন বলেই দেশ আজ প্রকৃতঅর্থে অর্থনৈতিক সফলতার দিকে এগিয়ে চলেছে। তিনি একে একে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সফলতার স্বাক্ষর রাখছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সব সময় স্বাধীনচেতা মানুষ ছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু ভারতীয় সৈন্য যাতে স্বল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করে, সেই জন্য ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি দেখেছিলেন পৃথিবীর সেই সময়ে যে সমস্ত দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু মিত্র বাহিনী সেই দেশে অবস্থান করায় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব পরিপূর্ণতা লাভ করেছিলনা। এই কারণেই তিনি ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশ থেকে ফেরত পাঠাতে অনুরোধ করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিনা মালিক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ বাংলাদেশ ব্যাংক শাখার সভাপতি নেছার আহম্মদ ভূঞা, আইসিবি বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি আমজাদ হোসেন কিবরিয়া, বিডিবিএল বঙ্গবন্ধু পরিষদ সাধারণ সম্পাদক মোঃ নূর উদ্দিন চৌধুরী, বেসিক ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি ড. শংকর তালুকদার, হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স করপোরেশন বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি তারেক ইমতিয়াজ খান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ নারায়নগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, কলাবাগান বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি এস এম ওয়াহিদুজ্জামান মিন্টু, ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এস এম মেহেদী হাসান, নাহিদ নূর আলো, সভাপতি বঙ্গবন্ধু পরিষদ, জামালপুর জেলা শাখা, বাকশাল মহাসচিব কাজী মোঃ জহিরুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সভাপতি মুশফিকুর রহমান মিন্টু, তেজগাঁও থানা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি হারুন অর রশিদ জাপান গার্ডেন সিটি বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহবায়ক মোঃ আতিকুর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও থানা কমিটির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।