বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ সরকার নিয়ন্ত্রিত হাসপাতাল। সরকার যেভাবে চাইবে সেভাবেই হাসপাতালকে কাজ করতে হবে। এ ধরনের একটি হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুষ্ঠু ও সঠিক চিকিৎসা হতে পারে বলে আমরা মনে করি না। তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য অনুরোধ করা হলেও সরকার সেটা অগ্রাহ্য করেছে। তাদের পছন্দমতো বিএসএমএমইউ হাসপাতালেই খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসা না দিয়ে সরকার মানবাধিকারবিবর্জিত কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কার্যালয়ে কমরেড মনি সিংহ মিলনায়তনে শনিবার ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চতুর্থ জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিকে কবর দেওয়া হয়েছে। দেশকে রাজনীতিহীন করার জন্য অনেক আগে থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ১/১১-এর আরও আগে থেকে দেশি-বিদেশি চক্রান্তেই এটা শুরু হয়।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তারা এমন একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা চেয়েছিলেন, যেখানে সবার গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে, মৌলিক অধিকার থাকবে, কথা বলতে পারবে, ভোট দিতে পারবে, সংগঠন তৈরি করতে পারবে, একে অপরের প্রতি সহনশীল হবে। আবার কেউ খারাপ কাজ করছে, অন্যায়-দুর্নীতি করলে জাতীয় সংসদে তা নিয়ে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে, ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। এসবের বিপরীতে আজকে সবকিছুই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে একাত্তর সালের সব অর্জনকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির বিরুদ্ধে একটা মামলাও মিথ্যা নয়- প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা মানুষ বিশ্বাস করবে না। পুরো বাংলাদেশে চার থেকে পাঁচ হাজার গায়েবি ও মিথ্যা মামলা হয়েছে। আর ওই মামলা দিয়েই সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পার করেছে।
এসব মামলায় দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-আটক করা, তাড়িয়ে বেড়ানো, বাড়িতে থাকতে না দেওয়া এবং নির্বাচনের প্রচারণায় আসতে না দেওয়া- এ কাজটা অত্যন্ত সূক্ষ্ণভাবে করেছেন তারা। সারাদেশের মানুষ জানে, মামলাগুলো সত্য না মিথ্যা।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছেন, কল্যাণের জন্য সংগ্রাম করছেন, সমৃদ্ধির জন্য সংগ্রাম করছেন। এ সংগ্রামে জনগণ সঙ্গে আছে। সেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অবশ্যই অপ্রতিরোধ্য একটি আন্দোলন গড়ে তুলবেন তারা। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সব অপশক্তির পরাজয় ঘটবে।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ কাউন্সিলে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম দলের চেয়ারম্যান হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন। পরে পুনর্নির্বাচিত চেয়ারম্যান দলের মহাসচিব হিসেবে এমএম আমিনুর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে নুরুল কবির ভূঁইয়ার নাম ঘোষণা করেন। আগামী চার দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।