বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও অর্থনৈতিক সাফল্যের প্রশংসা করে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়োন বলেছেন, এই সাফল্যের সঙ্গী হতে পেরে গর্বিত তার দেশ।
রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘কোরিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামে’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়নের জন্য জনগণ ও নেতৃত্বের প্রতি অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
দুই দিনের সফরে শনিবার বিকালে ঢাকায় আসেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী। সফরের দ্বিতীয় দিন তিনি এফবিসিসিআই ও কেআইটিএ (কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এসোসিয়েশন) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এফবিসিসিআইয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়োন বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে চারটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী লি।
দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি ও অবকাঠামো, আইসিটি খাতের উন্নয়ন, রপ্তানি খাতে পোশাক শিল্পের সঙ্গে হাই টেক ও শিপ বিল্ডিংকে সংযুক্ত করা এবং কোরিয়ান ইপিজেডের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ফোরামে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, কোরীয় প্রধানমন্ত্রীর এই বাংলাদেশ সফর দেশ দুটির মধ্যে সব ক্ষেত্রেই সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, কোরিয়া বাংলাদেশে ষষ্ঠ বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় শিল্প মন্ত্রণালয় তাদের কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ ও বাণিজ্য দেড় বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ব্যবসা পরিচালনা সহজ করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৯৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য দক্ষিণ কোরিয়ায় রপ্তানি করে এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৯৮১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো হচ্ছে- নীটওয়্যার, ওভেন গার্মেন্টস, ফুটওয়্যার, চামড়া এবং চামড়া জাতীয় পণ্য।
আর দক্ষিণ কোরিয়া থেকে যানবাহন, বিমান, জাহাজ এবং এ সংক্রান্ত যন্ত্রাংশ, ধাতু, মেশিনারি সামগ্রী, ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি এবং কেমিকেল পণ্য আমদানি করা হয়।