ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির উল্লেখ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু মহলের জল্পনা খন্ডন করে বলেছেন, সামষ্টিক আর্থিক ব্যবস্থাপনার দিক থেকে বাংলাদেশ “অত্যন্ত ভালো” করেছে।
কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ মূলত শ্রীলঙ্কা নয়। বাংলাদেশ কার কাছ থেকে এবং কোন শর্তে অর্থ ধার করবে সে বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছে”।
হাস বলেন, চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণ নেয়ার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ঢাকা বৈদেশিক অর্থায়নের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), বিশ্বব্যাংক গ্রুপ এবং জাপানকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়।
রাষ্ট্রদূতের বিশ্লেষণ অনুসারে বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা নেই যা এখন শ্রীলঙ্কায় প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ বাংলাদেশে বর্তমানে যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে।
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ডিসিএবি) এখানে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের সাথে সংলাপের অংশ হিসাবে “ডিসিএবি টক” শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
হাস আরো বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের তুলানায় এটি মূলত ভিন্ন প্রকৃতির। মার্কিন দূত কিছু সমালোচকের বিশ্লেষণ উল্লেখ করেন যারা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির পতনের কারণ হিসাবে চীনের “ঋণ-ফাঁদ’ নীতিকে দায়ী করেছেন। তবে, অন্য অনেকের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।
বাংলাদেশের সরকারের সমালোচক এবং বিরোধী রাজনীতিকদেরও আশঙ্কা ছিল বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার মতো পতন প্রত্যক্ষ করবে। যদিও নিরপেক্ষ আর্থিক বিশ্লেষকরা দুই দেশের বাস্তবতা ভিন্ন বলে জল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চীন বিরোধী “ঋণ ফাঁদ কূটনীতি” প্রচারনা সত্ত্বেও, বেইজিং দৃশ্যত উন্নয়নশীল দেশগুলিকে ছোট ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বিশাল মুনাফা লাভের পাশাপাশি একটি ভূ-রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা অব্যাহত রেখেছে।
চীন বরাবরই এ ধরণের অভিযোগ নাকচ করে বলেছে যে, “ঋণ ফাঁদ” একটি মিথ।