প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে যে কোনো প্রস্তাব সংসদে দিতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তিসঙ্গত হলে তা গ্রহণ করা হবে।
শনিবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে বাজেটের প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলনে এসে এই আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার বৃহস্পতিবার ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেট সংসদে প্রস্তাব করেছে। ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার এই বাজেট আগেরটির চেয়ে ১৮ শতাংশ বড়।
বাজেটের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই বাজেট জনবিরোধী, এতে ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্য বাড়বে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “শুধু বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা না করে জনগণের কল্যাণে কোনো প্রস্তাব থাকলে তা সুনির্দিষ্টভাবে সংসদে উপস্থাপন করুন। যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাব গ্রহণের মতো উদারতা সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সরকারের রয়েছে।”
বিএনপির সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, গত ১০ বছর ধরে বিএনপি প্রত্যেকটা বাজেট নিয়ে একই মনোভাব প্রকাশ করেছে।
“কাজেই তাদের এসব বিরূপ সমালোচনা মনগড়া ও গতানুগতিক। এটা তাদের নেতিবাচক রাজনীতির নেতিবাচক মনোভাবেরই প্রতিফলন।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মাত্র ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন করেছিল। তাদের পক্ষে জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দেওয়া ৫ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেটের ব্যাপকতা অনুধাবন করা সম্ভব নয়। এটাই স্বাভাবিক।”
দলের পক্ষ থেকে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটকে স্বাগত জানান ওবায়দুল কাদের।
এই বিশাল বাজেট বাস্তবায়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন কি না- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “বাজেট বাস্তবায়ন সব সময়ই চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ আমরা গ্রহণ করেছি। এই চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার নতুন সরকার নতুন স্পিরিট নিয়ে, নতুন উদ্যম নিয়ে এই বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে।”
তিনি দাবি করেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বাংলাদেশের সকল শ্রেণি ও পেশার জনগণের স্বপ্ন পূরণে বাস্তবসম্মত ভারসাম্যমূলক।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলনও এবারের বাজেটে ঘটেছে বলে মনে করেন তিনি।
কাদের বলেন, “জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্মিত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিত্তিমূলকে আরও সুদৃঢ় ও গতিশীল করণে নব-উদ্যোম সৃষ্টিকারী বাজেট। যুগান্তকারী পদক্ষেপের সমাহারে পরিপুষ্ট এই বাজেট।
“আওয়ামী লীগের ইশতেহারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সাফল্যরে সম্ভাবনাময় বাজেট এটা। নব উদ্যম, নব উদ্যোগের এবারকার বাজেট। দেশকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বাজেট এটা।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার এক বছরের জন্য নয়। এর বিস্তৃতি ভিশন ২০২১, ২০৪১, ২১০০ সাল ও ডেল্টা প্ল্যানের ইশতেহার।
“নির্বাচনী ইশতেহার সঙ্গে মিলিয়ে যারা আজকে বাজেট সম্পর্কে অপপ্রচার করছে, আমাদের বুঝতে হবে এই বাজেট এক বছরের জন্য। সরকারের পাঁচ বছরের জন্য বাজেট প্রণীত হয়নি।”
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আকতার পপি, রেমন্ড আরেং উপস্থিত ছিলেন।