একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশন শেষ হয়েছে। এই অধিবেশনেই গত ১৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেন, যা গত ৩০ জুন পাস হয়।
অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সরকারি ও বিরোধী দলসহ অন্যান্য দলের ২৬৯ জন সংসদ সদস্য ৫৫ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট আলোচনা করেন। এরপর গত ৩০ জুন পাস হয় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট।
বৃহস্পতিবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করার মধ্য দিয়ে অধিবেশনের ইতি টানেন।
সমাপনী বক্তব্যে তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, “আমাদের এই সাফল্যের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে অব্যাহত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। সংসদীয় গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
“সংসদকে কটাক্ষ, কটূক্তি করা, অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়া প্রত্যাশিত নয়। তা গণতন্ত্রের ভিতকে দুর্বল করে, অসাংবিধানিক শক্তিকে উৎসাহিত করে। অতীতে আমরা দেখেছি, সামরিক আইন জারি করে অবৈধ ক্ষমতা দখল, সংসদকে অমর্যাদা করা দেশ জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না।
তিনি বলেন, “সংসদ জনগণের কথা বলে। আসুন সংসদের মর্যাদা সমুন্নত রাখি। সংবিধানের আলোকে জনগণের উন্নয়নে কাজ করি।”
স্পিকার সংসদ পরিচালনায় সহযোগতিার জন্য, সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, ডেপুটি স্পিকারসহ সব সংসদ সদস্যকে ধন্যবাদ জানান।
গত ১১ জুন শুরু হয়েছিল এই অধিবেশন। বাজেট উপস্থাপনা অর্থমন্ত্রী শুরু করলেও হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরে তা শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা, যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
বাজেট আলোচনায় সরকারের মন্ত্রী, সরকারি-বিরোধী দলের সদস্যরা অনেকেই সঞ্চয়পত্রে উৎসে কর আরোপের বিরোধিতা করেন, যদিও তা আমলে নেননি অর্থমন্ত্রী।
অধিবেশনে বিএনপির সদস্যদের বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে কয়েকবার হইচই হয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২১ কার্যদিবসের এই অধিবেশনে মোট ৭টি বিল পাস হয়। এছাড়া ৭১ বিধিতে পাওয়া ২৩৫টি নেটিসের মধ্যে ১২টি নোটিস গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে আলোচনা হয়েছে ৫টি। ৭১(ক) বিধিতে ৭৫টি নোটিস আলোচিত হয়েছে।
অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য প্রশ্ন জমা পড়ে ৯৩টি। এর মধ্যে সংসদ নেতা জবাব দেন ৪১টি প্রশ্নের। এছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের জন্য দুই হাজার ২৭৪টি প্রশ্ন জমা পড়ে; মন্ত্রীরা উত্তর দেন এক হাজার ৬৫৮টির।