প্রথম সাত ম্যাচে তিন সেঞ্চুরির সঙ্গে ফিফটি দুটি। পরের সাত ম্যাচে মোটে একটি ফিফটি। প্রাথমিক পর্বের দুই ভাগে অদ্ভুত বৈপরীত্যের পর প্লে-অফে পরপর দুই ম্যাচে জ্বলে উঠলেন জস বাটলার। আগের ম্যাচে ৮৯ রানের দারুণ ইনিংস বিফলে গেলেও এবার বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে নায়ক তিনিই। বিরাট কোহলি, ফাফ দু প্লেসিদের বিদায় করে আইপিএলের ফাইনালে উঠল রাজস্থান রয়্যালস।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে শুক্রবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরের বিপক্ষে রাজস্থান রয়্যালসের জয় ৭ উইকেটে। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ১৫৭ রানের লক্ষ্য তারা পেরিয়ে যায় ১১ বল বাকি থাকতে।
মাত্র ৬০ বলে অপরাজিত ১০৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা বাটলার। ১০ চার ও ৬ ছক্কায় সাজানো ইংলিশ ওপেনারের ইনিংস।
আইপিএলের এক আসরে কোহলির সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড বাটলার স্পর্শ করলেন কোহলির সামনেই। ২০১৬ সালের আসরে রেকর্ড ৯৭৩ রান করার পথে ভারতের সাবেক অধিনায়ক চারটি সেঞ্চুরি করেছিলেন বেঙ্গালোরের হয়েই।
২০০৮ সালে প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এই প্রথম ফাইনালে উঠল রাজস্থান রয়্যালস। আগামী রোববার শিরোপা লড়াইয়ে গুজরাট টাইটান্সের মুখোমুখি হবে সাঞ্জু স্যামসনের দল।
রান তাড়ায় মোহাম্মদ সিরাজের করা প্রথম ওভারে দুই ছক্কা ও একটি চারে সুর বেঁধে দেন যাশাসবি জয়সওয়াল। ভারতীয় পেসারের পরের ওভারে টানা তিন বলে দুটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে ডানা মেলে দেন বাটলার।
পঞ্চম ওভারে তিনি দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন শাহবাজ আহমেদকে। জয়সওয়াল বিদায় নিলেও বাটলার ফিফটি তুলে নেন ২৩ বলে।
৬৬ রানে অবশ্য থেমে যেতে পারত তার ইনিংস। উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি কিপার দিনেশ কার্তিক।
এরপর আর কোনো সুযোগই দেননি তিনি। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৫৯ বলে। হার্শাল প্যাটেলকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে টানেন ম্যাচের ইতি।
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারের প্রথম ২৫৯ ইনিংসে বাটলারের ছিল না কোনো সেঞ্চুরি। পরের ৩৩ ইনিংসেই করে ফেললেন ৬টি!
আইপিএলের গত ও চলতি আসর মিলিয়ে সবশেষ ১৭ ইনিংসে তার সেঞ্চুরি হলো ৫টি, সবগুলোই রাজস্থানের হয়ে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রজত পাতিদারের ফিফটি ছাড়া বেঙ্গালোরের আর কেউ তেমন কিছু করতে পারেননি। এলিমিনেটর ম্যাচে বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে দলকে জেতানো এই ব্যাটসম্যান এবার ৪২ বলে করেন ৫৮ রান।
আগের ম্যাচের মতো এবারও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ তিন বড় তারকা কোহলি (৮ বলে ৭), দু প্লেসি (২৭ বলে ২৫) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১৩ বলে ২৫)।
দারুণ বোলিংয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়ে লক্ষ্যটা নাগালে রাখেন প্রসিধ কৃষ্ণা ও ওবেড ম্যাককয়। পরে খুনে ইনিংসে দলকে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে দিলেন বাটলার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর: ২০ ওভারে ১৫৭/৮ (কোহলি ৭, দু প্লেসি ২৫, পাতিদার ৫৮, ম্যাক্সওয়েল ২৫, মহিপাল ৮, কার্তিক ৬, শাহবাজ ১২*, হাসারাঙ্গা ০, হার্শাল ১, হেইজেলউড ১*; বোল্ট ৪-০-২৮-১, প্রসিধ ৪-০-২২-৩, ম্যাককয় ৪-০-২৩-৩, অশ্বিন ৪-০-৩১-১, চেহেল ৪-০-৪৫-০)
রাজস্থান রয়্যালর: ১৮.১ ওভারে ১৬১/৩ (জয়সওয়াল ২১, বাটলার ১০৬*, স্যামসন ২৩, পাডিক্কাল ৯, হেটমায়ার ২*; সিরাজ ২-০-৩১-০, হেইজেলউড ৪-০-২৩-২, ম্যাক্সওয়েল ৩-০-১৭-০, শাহবাজ ২-০-৩৫-০, হার্শাল ৩.১-০-২৯-০, হাসারাঙ্গা ৪-০-২৬-১)
ফল: রাজস্থান রয়্যাল ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: জস বাটলার