রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের কেনাকাটায় দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে যে প্রকৌশলীকে ওই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, ছাত্রজীবনে তার বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সংসদে এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওই ঘটনায় যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তার কিছু পরিচয় আমরা পেয়েছি। এক সময় তিনি বুয়েটে ছাত্রদলের নির্বাচিত ভিপিও নাকি ছিলেন।”
দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মাণাধীন আবাসন প্রকল্পের আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজে ‘অস্বাভাবিক’ ব্যয়ের অভিযোগ ওঠার পর প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলমকে প্রত্যাহার করা হয়। ওই ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটিও কাজ করছে।
সেখানে একটি বালিশের পেছনে ৬ হাজার ৭১৭ টাকা ব্যয় দেখানোর খবর গণমাধ্যমে আসায় এটা ‘বালিশ দুর্নীতি’ হিসেবে পরিচয় পেয়েছে।
সোমবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের সম্পূরক বাজেটের ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাব দিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের পক্ষে যখন প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বালিশের প্রসঙ্গটি তোলেন।
জবাব প্রধানমন্ত্রী ওই সরকার কর্মকর্তার রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরার পাশাপাশি বলেন, “তাকে সেখান থেকে সরানোও হয়েছে। যখনই তথ্য পেয়েছি, সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। যে দলেরই হোক, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির গঠন ও তাদের নানা কর্মকাণ্ডও তুলে ধরেন।
“এখানে (বিএনপিতে) এমন এমন লোক রয়ে গেছে, জন্ম থেকেই তাদের চরিত্র দুর্নীতির। তার কারণও আছে। এই দলটি বিএনপি যিনি করেছিলেন সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় সংবিধান ও সামরিক আইন লঙ্ঘন করে, পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট খন্দকার মোশতাকের সাথে হাত মিলিয়ে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার সাথে যিনি জড়িত, হত্যার পর খুনিদের ইনডেমনিটি অর্ডারটাকে ভোটারবিহিন পার্লামেন্টে আইন হিসেবে পাস করিয়ে দিয়েছেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “অস্ত্রের মুখে সায়েম সাহেবকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিয়ে নিজেকে নিজে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে ক্ষমতায় এসেছিল জিয়া। ক্ষমতায় দখল করার পর তাদের হাতে যে দল গড়ে উঠে তাদের চরিত্রটা জানা উচিৎ। তাদের উৎসটাই হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতিগ্রস্ততার মধ্যে থেকে উঠে আসা।”
“আর বালিশ নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করতে দেখলাম। এত মানুষ, এত বালিশ একদিনে কিনে ফেলল কীভাবে? এই বালিশ কেনার টাকার জোগানদারটা কে? সেটা আর বলতে চাই না।”
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির হোসেনের সুশাসন বিষয়ক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উনি যে দল থেকে এসেছেন, তার দলে কি ডিসিপ্লিনটা আছে?
“যার নিজের দলে সুশাসন নেই, গণতন্ত্র নেই। শৃঙ্খলা নেই। যেখানে কেউ কথা বলতে গেলেই বলা হয় খামোশ। তার থেকে কী আসা করা যায়? সুশাসন আছে বলেই দেশ আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।”