সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি কঠোর কোনো আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে পারেনি। যতবারই আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ততবারই ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি যে ধরনের আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করছে তাতে কোনো প্রভাব পড়ছে না। যার কারণে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এই আন্দোলনকে একেবারেই পাত্তা দিচ্ছে না। মোটামুটি শান্তিতেই আছে আওয়ামী লীগ। এই আন্দোলনকে মোকাবিলার প্রয়োজনও পড়ে না। কারণ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা যায় না। এমনকি অনেকে কমসূচির দিন ঘর থেকেই বের হন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আটক বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
সেই থেকে বিএনপির নেতারা বার বার আন্দোলন করার হুমকি দিয়েই যাচ্ছেন। কিন্তু বিএনপির এমন হুমকিকে পাত্তাই দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। যত বারই খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করা হয় তখনই আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিএনপি। আন্দোলন ডেকেও মাঠে নামেন না দলের নেতাকর্মীরা। এমন আন্দোলনকে মোকাবিলা করারও প্রয়োজন দেখছে না আওয়ামী লীগ। ফলে এমন আন্দোলনে মোটামুটি শান্তিতেই সময় পার করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এমন কথাবার্তাই বলছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। জানা যায়, রাজপথে সক্রিয় হচ্ছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের জন্য আঁটঘাট বেঁধে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
বিএনপির সম্ভাব্য এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য রয়েছে প্রস্তুতি। সব মিলে রাজনৈতিক ময়দানে উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যে বিক্ষোভ করছে তা আদালতের বিরুদ্ধে। এ বিক্ষোভ কোনো রাজনৈতিক দল বা ওই দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নয়। আদালত খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়নি বলেই তারা এ কর্মসূচি পালন করছে। এটা আদালতের বিরুদ্ধে অঘোষিত একটা কর্মসূচি। তিনি আগেও একাধিক বার বলেছেন, বিএনপি আন্দোলনের কথা বারবার বলে বেড়াচ্ছে। বিএনপির যদি সেই সক্ষমতা থাকে, সাহস থাকে, আন্দোলন করে দেখাক। ১০ বছরে তো ১০ মিনিটের একটি আন্দোলনও দেখা যায়নি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে জনগণের সামনে বিএনপির কিছু বলার নেই। ক্ষমতায় থেকে নানা অপকর্ম করেছেন এ দলের শীর্ষনেত্রী খালেদা জিয়া। এখন তিনি দুর্নীতির দায়ে আদালতের রায়ে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন। ২০১৩ সাল থেকে খালেদা জিয়া কতবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, দেশবাসী দেখেছেন। সুতরাং বিএনপি নেতাদের কথা জনগণ এখন আর আমলেও নেয় না। জনগণ জানেন, বিএনপির কথা ছাড়া কিছু করার নেই।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক মানবকণ্ঠকে বলেন, আওয়ামী লীগ সৃষ্টির পর থেকে সব ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। সরকার গঠনের পর থেকে সব কিছুতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত থাকে এবং কাজ করে। কে কী আন্দোলন করবে, না করবে তা কী ঘোষণা দিয়ে করা যায়। আর এতে আওয়ামী লীগের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আওয়ামী লীগ সব সময়ই প্রস্তুত থাকে। বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এরা জনগণের পক্ষে কথা বলে না। এরা সব সময় খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক জিয়া নিয়ে আছে। জনগণের জন্য নেই। আওয়ামী লীগ সব ধরনের আন্দোলন মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা একটি রাজনৈতিক পরিবারে জš§গ্রহণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন আন্দোলন করতে করতে দেশে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও সাম্প্রদায়িকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।