নির্বাচন ও আন্দোলনে জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপির নেতারা অপরাজনীতির অন্ধকার গিরিখাতে দিকভ্রান্ত পথহারা পথিকের মতো প্রলাপ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চাতুর্যপূর্ণ কথামালা ব্যবহার করে মিডিয়ায় গলাবাজির রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে। তারা এখনো বুঝতে পারেনি মিডিয়া নির্ভর গলাবাজির রাজনীতির দিন শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশের জনগণ অনেক সচেতন।’
ওবায়দুল কাদের শুক্রবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি আয়োজিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী ও বন্যার্ত জেলাসমূহে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যেও আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা যখন বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে, তখন বিএনপি মানুষের পাশে থাকা তো দূরের কথা উল্টো মানবিক সংকটকে পুঁজি করে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে অপরাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। যারা দুর্যোগ-দুর্বিপাক ও জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারে না কেবলমাত্র বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা করে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
তিনি বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচনে জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়ে তাদের নেতারা অপরাজনীতির অন্ধকার গিরিখাতে দিকভ্রান্ত পথহারা পথিকের মতো প্রলাপ বকতে শুরু করেছে নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে। বিএনপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করে চাতুর্য পূর্ণ কথামালা ব্যবহার করে মিডিয়া গলাবাজির রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে।
কাদের বলেন, এখনো তারা বুঝতে পারেনি মিডিযা নির্ভর গলাবাজির রাজনীতির দিন শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশের জনগণ অনেক সচেতন। বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। জনগণ জানে দুর্যোগ পরিস্থিতির মোকাবেলা এবং পরবর্তী অর্থনৈতিক গতিশীলতা পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই মানবিক সংকট উত্তরণ করে বাংলাদেশ তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশগামী নাগরিকদের জন্য নমুনা পরীক্ষা করে করোনার সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক, এজন্য সরকার সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে নমুনা পরীক্ষার কেন্দ্র। এক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা আগে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের করোনা সংক্রমিত প্রতিটি দেশই চেষ্টা করে যাচ্ছে সংক্রমণ রোধে। প্রতিটি দেশেরই সীমাবদ্ধতা আছে। সমৃদ্ধ দেশগুলো মহামারী নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশও এ মহামারি নিয়ন্ত্রণে এবং জনগণের সুরক্ষা দিতে নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অক্লান্ত প্রাণান্ত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সরকার সীমাবদ্ধতা দূর করে সংক্রমণ রোধ চিকিৎসা নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ, অসহায় কর্মহীনদের সুরক্ষা এবং চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ অব্যাহত রাখতে নিরলস কাজ করছে। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এ মহামারি থেকে সুরক্ষায় সচেতনতাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার, এ সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে। সরকার ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করেছে। সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সচেতনতা দুর্গ গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের নিজকে, পরিবারকে এবং সমাজকে সুরক্ষা দিতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্যোগ মোকাবেলায় অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক শক্তিশালী। এই শক্তিশালী শক্ত অবস্থানে থাকা সম্ভব হয়েছে গত এক দশকে শেখ হাসিনা সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারাবাহিকতার কারণে। একদিকে করোনার ক্ষতিকারক প্রভাব মোকাবেলা ও মানুষের জীবন-জীবিকা সচল করা অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও বন্যা কবলিত মানুষের খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, আবার বন্যা পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনর্বাসন কার্যক্রম। এ লক্ষে শেখ হাসিনার সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি সংগঠন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন ছাত্র সংগঠনের নেতা কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক আর না থাকুক দেশের যে কোন সংকট ও দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থাকে, আর এটাই আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, দেশের এই সংকটে বিএনপি কোন কার্যক্রমে নেই, তারা প্রেস ব্রিফিং করা ছাড়া আর কিছুতেই নেই।
ধানমন্ডিতে এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানা, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।