ভোটে দাঁড়ানোর পর বিএনপির পদ হারিয়ে তৈমুর আলম খন্দকার বলেছিলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ’; বহিষ্কৃত হওয়ার পরও একই প্রতিক্রিয়া জানালেন তিনি।
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার পর গত ৩ জানুয়ারি তৈমুরকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ এবং নারায়ণগঞ্জ মহগানগর বিএনপির আহ্বায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন তার প্রাথমিক সদস্য পদ ছিল।
সে সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় তৈমুর বলেছিলেন, “আলহামদুলিল্লাহ।
“আমি মনে করি, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটা সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আমাকে জনগণের জন্য মুক্ত করে দিয়েছেন। এখন আমি গণমানুষের তৈমুর, গণমানুষের কাছে ফিরে যাব।”
নারায়ণগঞ্জে ভোটে দাঁড়ানো তৈমুর বিএনপি থেকে পদচ্যুত
দলীয় পদ হারিয়ে তৈমুর বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ’
এরপর হাতি প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে থাকেন তৈমুর। তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল।
গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে ৬৬ হাজার ভোটে হারেন তৈমুর।
এর দুদিন পর মঙ্গলবার রাতে তৈমুর ও কামাল দুজনকেই বহিষ্কারাদেশের আলাদা চিঠি তাদের কাছে পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে তাদের বহিষ্কারের কারণ হিসেবে ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত’ থাকার কথা বলা হয়েছে।
রিজভী বলেন, “এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।”
তৈমুরকে এবার বহিষ্কার, কামালও বহিষ্কৃত
এর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তৈমুর বলেছেন, “এখনও চিঠি পাইনি। তবে আমি যতটুকু শুনছি ঘটনা সত্য। আলহামদুলিল্লাহ।
“দলের একজন নিবেদিত কর্মী হয়ে এমন পুরস্কার পেতে হবে এটা জাতি বিবেচনা করবে। দেশের রাজনীতিতে যে মহামারী চলছে, এটাই তার নমুনা। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে শুধু হাতির পক্ষে সারা কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে এমনটি হয়েছে তা নয়। নৌকার বিরুদ্ধে যারা কাজ করেছে শুনছি সেখানে এরকম আদেশ হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় রাজনীতিতে মহামারী চলছে।”
কামালও চিঠি এখনও পাননি জানিয়ে বলেন, “আমি শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক। সেই আদর্শ থেকে কেউ সরাতে পারবে না। এতদিন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে রাজপথে ছিলাম, এখন সাধারণ সমর্থক হিসেবে থাকবে। আমৃত্যু দলের জন্য কাজ করে যাব।”
২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন তৈমুর। পরে দলের নির্দেশে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
আইনজীবী তৈমুর দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিতে যুক্ত ছিলেন। বিএনপির ক্ষমতায় থাকাকালে বিটিআরসির চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন তিনি।
২০১৬ সালে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের পর তৈমুরকে দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়।
গত রোববার ভোট শেষে তৈমুর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “তৈমুর আলমের খন্দকারের পদ-পদবি লাগে না। বিএনপি রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। এটা নিয়ে মরতে চাই।”
তার দুদিন পরই বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হলেন তিনি।