ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল বিক্ষোভ চলার মাঝে নীরব থাকার পর এবার প্রকাশ্য জনসভায় দেশবাসীকে ‘বৈচিত্র্যে’ সম্মান করা এবং ‘বিবিধের মধ্যে ঐক্যে’ বিশ্বাসের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এনডিটিভি জানায়, রোববার দিল্লির রামলীলা ময়দানে ওই জনসভা করেছেন মোদী। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি স্লোগান তোলেন, “বিবিধের একতা, ভারতের বিশেষত্ব।” নতুন স্লোগান তৈরি করে জনতার উদ্দেশে মোদী বলেন, “এখন আমি বলব ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’, আপনারা বলবেন ‘ভারতের বিশেষত্ব’।
এ জনসভার মধ্য দিয়ে কার্যত দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রচার শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে দিল্লির বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলার আগে তিনি তিনবার ওই স্লোগান দেন।
এরপর নাগরিকত্ব বিল নিয়ে মোদী জনতাকে বলেন, “উঠে দাঁড়িয়ে সংসদকে সম্মান জানান”। তিনি আরো বলেন, “মোদীকে ঘৃণা করুন, ভারতকে ঘৃণা করবেন না। মোদীর কুশপুত্তলিকা পোড়ান, তবে সরকারি সম্পত্তি জ্বালাবেন না।”
জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) এবং নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতজুড়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছে মোদী সরকার। বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে সহিংসতা-উত্তেজনা ছড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লি। উত্তরপ্রদেশে নিহত হয়েছে ১৬ জন। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে।
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে মুসলিমদেরকে ফের আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের কোনও মুসলমানকে তাড়াতে এই আইন নয়। ধর্ম দেখে কাজ করি না। মুসলিমরা নিশ্চিন্ত থাকুন। আমি মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছি, এ মিথ্য দাবি গ্রহণ মানুষ গ্রহণ করবে না।”
বিরোধীদের একহাত নিয়ে মোদী বলেছেন, “মিথ্যা প্রচার করে বিরোধীরা বিশ্বের কাছে ভারতের বদনাম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভারতের সংসদকে অসম্মান করছে। যে মানুষেরা আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে ধর্মের কারণে প্রতারিত, সেই শরণার্থীদের জন্য সিএএ।”
তার কথায়, “ভারতের কোনও নাগরিক, তা তিনি হিন্দু হোক বা মুসলমান, তাদের জন্য এ আইন নয়। এতে দেশের ১৩০ কোটির কোনও নাগরিকের উপর প্রভাব পড়বে না।”
কোথাও বিভাজের গন্ধ আছে কিনা সে প্রশ্ন তুলে মোদী বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, থেকে থাকলে আপনারা তা দেশবাসীর সামনে আনুন। কোথাও কোনও বৈষম্য থাকলে আমি জবাব দেব।”