ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার করেছে বিএনপি। রোববার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এই ইফতারের আয়োজন করেন দলটির নেতারা। এতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
ইফতারে অংশ নেওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে কুশল বিনিময় করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ডের প্রায় চার মাস পরে দলীয় কোনো প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশ নিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বিএনপির চলমান আন্দোলনসহ ‘সরকারের দমন-পীড়নের বিভিন্ন বিষয়’ কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনকে আমরা গভীরভাবে মূল্যায়ন করি। যার মধ্যদিয়ে প্রকৃতভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এটা অর্জন করতে না পারি, ততক্ষণ জনগণের শান্তিপূর্ণ ও অসহিংস আন্দোলন চলবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ গভীরভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটকাল অতিক্রম করছে। রাষ্ট্র আবারো ফ্যাসিবাদি শাসনের কবলে পড়েছে। বিশ্ববাসী জানে যে, গত ৭ জানুয়ারি যা হয়েছে, তা কোনো নির্বাচন নয়। বরং জাতির গণতান্ত্রিক প্রত্যাশাকে অপমান করা হয়েছে।’
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর অমানবিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিএনপি গভীরভাবে অবহিত বলে উল্লেখ করেন দলটির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ও জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। দুই রাষ্ট্রের কৌশলই এই সংকটের সমাধান হতে পারে।’
কূটনীতিকদের মধ্যে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার, অস্ট্রিলিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত নার্দির সিম্পসন, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, জার্মান অ্যাম্বাসেডর আখিম ট্রোসটার, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ ছাড়াও ইফতার অনুষ্ঠানে ছিলেন চীন, ভারত, পাকিস্তান, নরওয়ে, সুইডেন, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। বিএনপির ইফতারে অংশ নিয়েছেন জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরাও।
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, মীর নাসির, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলে এলাহী আকবর, আবদুল কাইয়ুম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সুজা উদ্দিন, ইসমাইল জবিউল্লাহ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জহির উদ্দিন স্বপন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কায়সার কামাল, আসাদুজ্জামান আসাদ, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, মীর হেলাল, মওদুদ হোসেন আলমগীর, শাহ নেসারুল হক, ইশরাক হোসেন, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, অধ্যাপক শহীদুজ্জামান, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, সাবেক ব্যাংকার বখতিয়ার নাসের বখতিয়ার, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব তাজুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি।
ইফতার ও মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকরা নৈশভোজেও অংশ নেন।