‘বিদ্যুতের ‘ভুতড়ে’ বিলের নামে সরকার জনগণের রক্ত টেনে নিচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (২৭ জুন) সকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’র উদ্যোগে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সংক্রান্ত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন (সংশোধন) বিল সংসদে উত্থাপনের প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, বাড়িতে বাড়িতে বহু লোক আমাদের বলছেন যেখানে বিদ্যুৎ বিল হওয়ার কথা এক হাজার থেকে ১১শ’-১২শ’ টাকা। সেখানে ২০-২৫ হাজার টাকা বিল আসছে। এই ভুতুড়ে বিলের জন্য পত্রিকায় অনেক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। সরকারের এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, সরকার এদিকে তাকাচ্ছে না। তারা নির্লজ্জভাবে গায়ের জোরে বছরে কয়েকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির আইন করছে। সিরিঞ্জে করে যেমন রক্ত টান দেয়- এই সরকার জনগণের শরীরে সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত টান দিচ্ছে এই বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে।
তিনি বলেন, তাদের (সরকার) টাকা দরকার। এই টাকা কোথায় যাচ্ছে জানেন? এটাও শুক্রবার বিভিন্ন পত্রিকায় বেরিয়েছে- ৫ হাজার কয়েকশ’ কোটি টাকা সুইস ব্যাংকে জমা আছে। এই টাকা কার? এই টাকা মন্ত্রীদের, এই টাকা আমলাদের, এই টাকা ক্ষমতাসীন দলের লোকদের। ১১-১২ বছর জনগণের এই টাকা আত্মসাৎ করে সুইস ব্যাংক ফুলে-ফেঁপে একেবারে বিশাল মহিরুহে পরিণত করেছে। এখন আরও টাকা দরকার, সুইস ব্যাংকে আরও কালো টাকা পাঠাতে হবে-এই লক্ষ্য নিয়ে বছরে কয়েকবার বিদ্যুৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে।
করোনা ভাইসরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ মরছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, অক্সিমিটার নেই, চিকিৎসা নেই ঢাকার কয়েকটি হাসপাতাল ছাড়া। কিছু গণমাধ্যমে আসছে কিন্তু সব আসছে না। হাসপাতালে গিয়ে করোনা রোগী কোনো চিকিৎসা পাচ্ছে না। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত ভেঙে গেছে, একেবারে ভঙ্গুর। মানুষ এখন কুকুর-বিড়ালের মতো রাস্তায় মারা যাচ্ছে এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার উপহার, এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের উপহার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সম্রাটের মতো’ দেশ শাসন করছেন মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, কোনো এক দেশের সম্রাট বলেছিলেন, আই অ্যাম ‘ল’, আমিই হলাম আইন। শেখ হাসিনা হলেন সেই সম্রাটের মতো। আমিই আইন, আমি যেটা বলব, সেটাই মানতে হবে। কিসের পার্লামেন্ট।
মানববন্ধনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি নবী উল্লাহ নবী, ফিউচার অব বাংলাদেশের শওকত আজিজ, সাজ্জাদুল হানিফ বক্তব্য দেন।
এ সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা কেজি সেলিম, ফয়সাল প্রধান, আহম্মেদ উল্লাহ, জুনায়েদ চৌধুরী, বাবু তানভীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।