জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বিভক্ত করার কঠিন ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বিভক্ত জাতি কখনো রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয়। আগামীর বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের নবনির্বাচিত আমিরের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর মতো আর কারো ওপর বিচারের নামে জুলুম না হোক। যে যার কর্মের ফল বিচারের মাধ্যমে পেলেই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে। ফলে ভুক্তভোগী মজলুম ন্যায়বিচার পাবে। আওয়ামী লীগ মানুষকে পশুর মতো হত্যা করেছে। শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ কেউ তাদের গণহত্যা থেকে রক্ষা পায়নি। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ কেবলমাত্র চারদলীয় জোটের ঐক্যের ফাটল সৃষ্টি করে নিজেদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ পরিষ্কার করতে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে। যারা কথায় কথায় সংবিধানের দোহাই দেয় তারা নিজেদের তৈরি করা সংবিধান নিজেরাই মানেনি। কোনো হত্যা মামলা বাদীর সম্মতি ব্যতীত প্রত্যাহার বা বাতিল করার ক্ষমতা কারো নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করেই ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলা বাতিল করে দিয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখান থেকেই শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। তাদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতেই ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের ফ্যাসিবাদের মুখোশ উšে§াচন করেছে। শফিকুর রহমান বলেন, গণমাধ্যম সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের ভূমিকা পালন করলে কেউ জালিম হতে পারবে না।
তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপন ও পরিবেশন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে হবে। সাংবাদিকতা একটি মহান দায়িত্ব। এই দায়িত্ব জনগণের আমানত। সেজন্য জনগণের আমানত রক্ষায় সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা দলের হয়ে কাজ করা যাবে না। জামায়াতে ইসলামী যদি কোনো ভুল করে থাকে সেটিও তুলে ধরতে হবে। আবার জনগণের স্বার্থে যেসব কাজ করে থাকে তাও তুলে ধরতে হবে।
অনুষ্ঠানে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দ্বীনের পথে যারা থাকে তারাই পরস্পর ভাই ভাই। এই সম্পর্ক পৃথিবীর সব সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। আগামী দুই বছর দায়িত্বশীলদের পূর্বের সব পরীক্ষার চেয়ে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানামুখী সংকট, সংঘর্ষ, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, এই দায়িত্বশীলদেরই মোকাবিলা করতে হবে।
দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় শপথ অনুষ্ঠানে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি মো. দোলোয়ার হোসেন, মু. কামাল হোসাইন, ড. মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান, কর্মপরিষদের সদস্য মো. কামাল হোসেন, মোহাম্মদ ফরিদ হোসাইন, অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক এবং প্রচার ও মিডিয়ার সমন্বয়ক আবদুস সাত্তার সুমন প্রমুখ।