বুলগেরিয়ার ৫৬ হাজার টন গম নিয়ে জাহাজ চট্টগ্রামে

image-740632-1700082584

অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে আবার গম ও চাল আমদানি শুরু করেছে সরকার। আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে ৫ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই লাখ টন গম ও তিন লাখ টন চাল। প্রথম প্যাকেজের দ্বিতীয় চালানের গমবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। জাহাজটিতে গম রয়েছে ৫৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।

এসব গমের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের অ্যাগ্রোকর্পস। সরকার বেশির ভাগ সময় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করলেও এবার গম আমদানি করেছে বুলগেরিয়া থেকে। বুধবার বিকাল পর্যন্ত জাহাজটি থেকে গম খালাস চলছিল। চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তৃতীয় ধাপে চলতি মাসের শেষের দিকে চালের চালান আসবে বলে জানা গেছে।

খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ৫ নভেম্বর ‘এমভি কনন’ নামে একটি জাহাজ ৫৫ হাজার ৮৬২ দশমিক ৭৫০ মেট্রিক টন গম নিয়ে বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। ৭ নভেম্বর অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাহাজ থেকে আমদানি করা গমের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। নমুনা সংক্রান্ত প্রতিবেদন ‘খাওয়ার উপযোগী’ পাওয়ার পর ৯ নভেম্বর থেকে গম খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমদানি করা গমের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হবে ৩৪ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৫০১ মেট্রিক টন আর মোংলা বন্দরে খালাস হবে ২১ হাজার ৫৬ দশমিক ০৪২ মেট্রিক টন গম। বুধবার বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে ১৬ হাজার ৩১৭ দশমিক ১৬৮ মেট্রিক টন। বাকিগুলো খালাস চলছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে খালাস শেষ হবে বলে আশা চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগের। খাদ্য মন্ত্রণালয় জি-টু-জি ও আন্তর্জাতিক টেন্ডারের আওতায় বিপুল পরিমাণ গম আমদানি করলেও তা খোলাবাজারে আসার সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমে এলেও এর প্রভাব পড়েনি দেশের বাজারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরপরই অধিকাংশ গম আমদানি হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে। দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বর্তমানে ভালো মানের গম বিক্রি হচ্ছে মনপ্রতি ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯ টাকায়। অন্যদিকে মাঝারি ধাঁচের গমের দাম মনপ্রতি ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। এতে দেশের পাইকারি বাজারেই গমের দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ৫১ টাকা।

পাহাড়তলীর গমের আড়তদার কামরুল হাসান মহিউদ্দিন জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গমের দাম বাড়তে শুরু করে। ইউক্রেন-রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম গম রপ্তানিকারক দেশ। ইউক্রেন-রাশিয়ার বিকল্প হিসাবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের গমের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা বেড়েছে। ভারত ছাড়া আমাদের দেশে গম আসে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও আর্জেন্টিনা থেকে। তবে সেসব দেশ থেকে গমের আমদানি খরচও বেশি। অন্যদিকে ভারতের গম কম আমিষযুক্ত। অস্ট্রেলিয়া-কানাডা ও আর্জেন্টিনার গম অধিক আমিষযুক্ত। ময়দা তৈরিতে এসব গম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।

চট্টগ্রাম চলাচল ও সংরক্ষণ কার্যালয়ের উপনিয়ন্ত্রক সুনীল দত্ত যুগান্তরকে জানান, নতুন করে আমদানি করা গমের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হবে ৩৪ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৫০১ মেট্রিক টন আর মোংলা বন্দরে ২১ হাজার ৫৬ দশমিক ০৪২ মেট্রিক টন। বুধবার বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে ১৬ হাজার ৩১৭ মেট্রিক টন।

Pin It