বৈরুত বিস্ফোরণের পর প্রায় এক মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে এতো দিন পরেও কি বেচে থাকা সম্ভব? উত্তর যাই হোক, বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে হৃৎস্পন্দনের সঙ্কেত পেতেই বৃহস্পতিবার থেকে নতুন করে ধ্বংসস্তূপের নীচে খোঁজ শুরু হয়েছে।
আশাহীন ভাবে কাজ করলেও ‘মিরাকল’ এর আশায় খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছেন উদ্ধারকারীরা। হৃৎস্পন্দনের ওই সঙ্কেতের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে লেবানন ও চিলির বিশেষ উদ্ধারকারী দল।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাতে। চিলির উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে একটি স্নিফার ডগ ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়া ভবনের নীচে কিছু একটা গন্ধ পেয়ে কারো বেঁচে থাকার ইঙ্গিত করে। তবে বুধবার রাতে আর কাজ শুরু করা সম্ভব না হলেও বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফুটতেই নিয়ে আসা হয় বিশেষ যন্ত্র। এই যন্ত্র মানুষের হৃদযন্ত্র সচল থাকলে তার উপস্থিতি নির্দেশ করে। প্রতি মিনিটে কত হৃৎস্পন্দন, সেটাও বলে দেয় এই যন্ত্র। তাতেই হৃৎস্পন্দনের প্রমাণ পাওয়া যায়। তার পরেই খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেন দুই দেশের বিশেষ উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সারা দিন চেষ্টা করেও ওই হৃৎস্পন্দনের উৎসস্থলে পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। লেবানন ও চিলির উদ্ধারকারী দলের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা লেবাননের আধিকারিক নিকোলাস সাদি বলেন এএফপি কে বলেন, ‘বাড়িঘরের ভেঙে পড়া দেওয়াল, ইট-কাঠ-সিমেন্টের ধ্বংসস্তূপ অনেকটাই সরিয়ে ফেলেছি। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি।’
কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, দ্রুত হৃৎস্পন্দন কমে যাওয়ায়। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, বুধবার হৃৎস্পন্দনের যে হার ছিল, শুক্রবার তার চেয়ে অনেকটাই কমে গিয়েছে। সাদি বলেন, ‘‘বড় বড় ঢালাইয়ের দেয়াল গুলো সরিয়ে আমরা হৃৎস্পন্দন বা শ্বাসপ্রশ্বাসের উপস্থিতির জন্য আবারও স্ক্যান করি। সেই যন্ত্রে হৃৎস্পন্দনের হার ধরা পড়েছে প্রতি মিনিটে ৭ বার। বৃহস্পতিবার এই হার ছিল ১৬ থেকে ১৮ বার।’’ সেই কারণেই অতি দ্রুত হৃৎস্পন্দনের উৎসস্থলে পৌঁছতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
গত ৪ আগস্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে লেবাননের বৈরুত বন্দর এলাকা। পর পর দু’টি বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ১০ কিলোমিটার দূরের বাড়িঘরে পর্যন্ত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ঘটনায় ১১৯ জনের মৃত্যু সহ আহত হয়েছিলেন আরও কয়েকশো মানুষ। ঘটনায় এখনও নিখোঁজ ৭ জন।