ভ্রমণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে নাসা। কক্ষপথে আবর্তনশীল এই গবেষণা ল্যাবের একটি অংশ আরও “বাণিজ্যিক কার্যক্রমের” জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এই ঘোষণার ফলে মহাকাশ কেন্দ্রে ব্যক্তিগত নভোচারী পাঠাতে পারবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সেখানে ৩০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারবেন নভোচারীরা। ২০২০ সালে ‘যাতে দ্রুত সম্ভব’ এ ধরনের প্রথম অভিযান পরিচালনার আশা করছে নাসা– খবর ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিররের।
এই অভিযানের তহবিল আসবে ব্যক্তিগত খাত থেকে। প্রতি যাত্রায় খরচ হবে প্রায় পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে কোনো ভ্রমণার্থী থাকলে প্রতি রাতের জন্য ভাড়া গুণতে হবে ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার। এর থেকে আয়ের মাধ্যমে ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে প্রথম নারী এবং পরবর্তী পুরুষ পাঠানোর মিশনের তহবিল জোগাড় হবে বলে জানিয়েছে নাসা।
আইএসএস-এ মানব পরিবহনের জন্য বোয়িং এবং স্পেসএক্স যেহেতু ইতোমধ্যেই ক্যাপসিউল বানাচ্ছে তাই মহাকাশে ভ্রমনার্থী পরিবহন এবং এর সঙ্গে আনুষঙ্গিক সব সেবা দেবে তারা।
মহাকাশে যেতে হলে নাসার মেডিকাল স্ট্যান্ডার্ড, প্রশিক্ষণ এবং সনদ প্রক্রিয়া পার করতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রাইভেট নভোচারী মিশনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কক্ষপথের ল্যাবরেটরিতে নতুন বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালুর জন্যও আহ্বান জানিয়েছে নাসা।
মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে পরীক্ষা চালানোর জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো উন্মুখ হয়ে রয়েছে তাদেরকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। মহাকাশে সিনেমা বানানোর জন্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আহ্বান করা হয়েছে।
বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে আইএসএস-এর উপাদান ব্যবহার করতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো। আর তারা নাসার নভোচারী এবং বিশেষজ্ঞদেরও সহায়তা নিতে পারবেন।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে গবেষণা এবং মালামাল সরবরাহে সহায়ক প্রতিষ্ঠান ন্যানোর্যাকস প্রধান জেফ ম্যাবার বলেন, “আপনি দেখেন মহাকাশ সংস্থাটি আইএসএসকে কক্ষপথে আরও ১০ বছর রাখার পথে এগোচ্ছে এবং বোঝার চেষ্টা করছে তাদের কীভাবে এগানো উচিৎ।”
“আর এটি খুব জরুরী পদক্ষেপ। এটি একটি নতুন অধ্যায়ের শুরু,” বলেন ম্যাবার।
এমন পদক্ষেপ নাসার জন্য মোড় ঘোরানো একটি কার্যক্রম। এর আগে বাণিজ্যিক কাজে মহাকাশ কেন্দ্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং নভোচারীদেরকে অলাভজনক গবেষণার অংশ হতে উদ্বুদ্ধ করেছে সংস্থাটি।
২০১৮ সালের বাজেটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন ২০২৫ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে সরকারি তহবিল বন্ধ করা হবে। আর এটির কার্যক্রম প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করা হবে।