করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবারও বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে জানাজা হয়েছে, যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি।
রোববার বিকালের এই জানাজায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে চেষ্টা চালিয়েও বিপুল উপস্থিতির কারণে ব্যর্থ হওয়ার কথা বলেছেন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা।
মহামারীর মধ্যে গত ১৮ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ারই সরাইলে এক জানাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতিতে হওয়ার পর তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উঠে এসেছিল।
সমালোচনার মুখে তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তখন সরাইল থেকে সরানো হয়েছিল।
কোভিড-১৯ রোগ ভীষণ ছোঁয়াচে বলে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ওই জানাজা হয়েছিল।
এখন কিছু বিধি-নিষেধ শিথিল করে অফিস-আদালত খুললেও স্বাস্থ্যবিধি কঠোর ভাবে মেনে চলার নির্দেশনা রয়েছে, মাস্ক না পড়লে শাস্তির বিধানও রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতেই রোববার বিকালে জেলা সদরের ভাদুঘরে জামিয়া সিরাজীয়া দারুল উলুম মাদ্রাসায় দেশখ্যাত আলেম শায়খুল হাদিস মনিরুজ্জামান সিরাজীর (বড় হুজুর) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
ভাদুঘর জামিয়া সিরাজীয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সিরাজীর জানাজা পড়তে বিভিন্ন স্থানে থেকে তার হাজার হাজার ভক্ত ছুটে আসেন। জানাজায় ইমামতি করেন মনিরুজ্জামান সিরাজীর নাতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ।
আসরের নামাজের পর জানাজা শুরু হলেও ভিড়ের চাপে তার আগেই মাদ্রাসা সংলগ্ন কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানাজায় অংশগ্রহণকারী অধিকাংশের মুখে যেমন মাস্ক দেখা যায়নি, তেমনি সামাজিক দূরত্বও রক্ষা করা হয়নি।
সড়কের উপর সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে মানুষ যখন জানাজা পড়ছিল,তখন আশপাশে অনেক পুলিশের উপস্থিতিও দেখা গেছে।
পুলিশের তৎপরতার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে জানাজা করার ব্যাপারে আমরা তাদের বলেছি। আমরা চেষ্টা করেছি।”
সেখানে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথাও বলেন মোজাম্মেল।
মনিরুজ্জামান সিরাজী (৯০) বার্ধক্যজনিত কারণে রোববার দুপুরে মারা গেলে তাকে দেখতে যান জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দোলা খাঁন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা সিরাজুল ইসলামের বড় ছেলে ছিলেন মনিরুজ্জামান সিরাজী। জানাজা শেষে ভাদুঘরেই বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।