জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-কেএফডব্লিউ এবং ব্র্যাকের যৌথ উদ্যোগে যাত্রা শুরু করল ‘ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ড’।
প্রাথমিকভাবে ১ কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ইউরো নিয়ে গঠন করা হয়েছে এই তহবিল। প্রতি ইউরো ৯৫ টাকা হিসাবে যার পরিমাণ ১১১ কোটি টাকার কিছু বেশি।
বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে ফান্ড গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছে বলে ব্র্যাকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোল্ট্জ্, কেএফডব্লিউ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর অনির্বাণ কুণ্ডুসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে জলবায়ু সমস্যার কারণে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে কিংবা উদ্বাস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এমন জনগোষ্ঠীর দুর্যোগ মোকাবেলার সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে সহায়তার জন্য এই তহবিলটি গঠন করা হয়েছে। তহবিলটির কার্যক্রমের কেন্দ্রে রয়েছে শহরাঞ্চলে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা জনসাধারণ।
গত বছরের নভেম্বরে এই তহবিল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
প্রথমে খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা এবং সিরাজগঞ্জ জেলায় জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর দুর্যোগ মোকাবেলায় সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই তহবিলের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। শহর এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনায় দক্ষ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ডের সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবে। তহবিলটির নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে ব্র্যাকও বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আসিফ সালেহ্ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন বিশ্বব্যাপী একটি চ্যালেঞ্জ। আগামী পাঁচ বছর ব্র্যাকের কার্যক্রমের অন্যতম প্রধান এলাকা হবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা। এই তহবিল বাংলাদেশের জন্য একটি চমৎকার উদ্ভাবনী উদ্যোগ, যার মাধ্যমে টেকসই কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকেও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য উপযুক্ত পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
“এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কার্যক্রমের উত্তরোত্তর বিস্তার ঘটবে।”
কেএফডব্লিউ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর অনির্বাণ কুণ্ডু বলেন, “ব্র্যাকের সঙ্গে এ রকম একটি তহবিল গঠন করতে পেরে আমরা গৌরব বোধ করছি। এই তহবিল শহর এলাকায় জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলার পদক্ষেপে দীর্ঘদিনের আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।”
রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোল্ট্জ বলেন, স্বল্পোন্নত ও উদীয়মান দেশগুলোর ইতিবাচক পরিবর্তনে আর্থিক সহায়তা চালিয়ে যেতে জার্মানি অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
কমপ্রিহেনসিভ ডিজাসটার ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম (সিডিএমপি-২) ২০১৪ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ৭ জনের মধ্যে ১ জন ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাস্তুহারা হবে।জলবায়ু পরিবর্তন প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে যা গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে দরিদ্র জনগণের জন্য জীবিকার সঙ্কট তৈরি করবে।