শ্রীলংকা ইনিংসের শেষ দশ ওভার। আর বাংলাদেশ ইনিংসের প্রথম ১৬ ওভারেই ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। শেষ দশ ওভারে শ্রীলংকা তোলে একশ’র বেশি রান। টস জিতে ২৯৪ রান তুলে লক্ষ্যটা কঠিন করে দেয়। বাংলাদেশ প্রথম ১৬ ওভারে ৬১ রানে হারায় ৪ উইকেট। শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়। তারপরও টিভি পর্দায় কিছু চোখ সেটে ছিল। সৌম্যর ব্যাটিং দেখার আশায়। কিন্তু সৌম্য সরকার ৬৯ রান করে ফিরতেই শেষ। বাংলাদেশ তিন ম্যাচ সিরিজের শেষটায় হেরেছে ১২২ রানের বিশাল ব্যবধানে। তামিমরা বিশ্বকাপের পরের সিরিজটাই শুরু করল ধবলধোলাই হয়ে।
শ্রীলংকার কাছে বাংলাদেশ ৯১ রানের বড় হার দিয়ে সিরিজ শুরু করে। মালিঙ্গার বিদায়ী ম্যাচে লংকানদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারে টাইগাররা। ৪৪ মাস পরে ঘরের মাঠে সিরিজ জেতে শ্রীলংকা। আর শেষ ম্যাচেও ব্যাটে-বলে বিবর্ণ দল তামিমরা। বিশ্বকাপের পরের এই সিরিজে যেন আলগা হয়ে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যত! সাকিব-মাশরাফি না থাকায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের পাইপলাইন নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল।
বুধবার শ্রীলংকা সিরিজের শেষ ম্যাচটি তাদের তারকা ক্রিকেটার নুয়ান কুলাসেকারাকে উৎসর্গ করার ঘোষণা দেয়। মালিঙ্গা যেমন মাঠ থেকে বিদায় নিয়েছেন। কুলাসেকারা তা পারেননি। কিন্তু ওয়ানডেতে ১৯৯ উইকেট নেওয়া এই লংকান পেসারের শ্রীলংকা ক্রিকেটে অবদান কম নয়। তার তাই কিছু সম্মান পাওনা ছিল। শ্রীলংকা অধিনায়ক করুনারত্নে ম্যাচ জিতে কুলাসেকারাকে উপহার দেওয়ার কথা জানায়। সেটা তারা পেরেছেনও। পারেননি তামিমরা। তারাও চেয়েছিলেন একটা জয় ও কিছু আত্মবিশ্বাস নিয়ে দেশে ফিরতে।
বাংলাদেশ শুরুর দুই ম্যাচেও মতো এ ম্যাচেও শুরুতে শ্রীলংকার উইকেট তুলে নেন। কিন্তু সুযোগ নিতে পারেনি। আভিস্কা ফার্নান্দো ফিরে যান দলের ১৩ রানে ব্যক্তিগত ৬ রান করে। সেই ধাক্কা দিমুথ করুনারত্নে এবং কুশল পেরেরা সামাল দেন। তারা যোগ করেন ৮৩ রান। করুনারত্নে ৪৬ রান করে দলের ৯৬ এবং পেরেরা ৪২ রান করে দলের ৯৮ রানে আউট হন। শতকের আগে লংকানদের তিন উইকেট নিয়েও চাপ তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ বোলাররা। অ্যাঞ্জেল ম্যাথুস এবং কুশল মেন্ডিস সেখান থেকে ১০১ রান যোগ করেন। কুশল মেন্ডিস খেলেন ৫৪ রানের ইনিংস।
শেষ ওভারে ৮৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে আউট হন অবসর ভেঙে ক্রিকেটে ফেরা ম্যাথুস। তার সঙ্গে ১৪ বলে ৩০ রানের এক ঝড় দেখান দাশুন সানাকা। বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় শ্রীলংকা। এরপর বল হাতেও দুর্দান্ত শুরু করে তারা। ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী তামিম শুরুতে ২ রান করে ফিরে যান। দলে জায়গা পাওয়া ওপেনার আনামুল হক খেলেন ১৪ রানের ইনিংস। শুরুর দুই ম্যাচে রান পাওয়া মুশফিক দলের ৪৩ রানে ব্যক্তিগত ১০ রান করে ফেরেন। বড় ধাক্কাটা ওই খানেই খায় বাংলাদেশ। সেটা আরও বাড়িয়ে ৪ রান করে ফিরে যান মোহাম্মদ মিঠুন।
সেই চাপ থেকে বাংলাদেশ আর উঠতে পারেনি। সৌম্য সরকারকে রেখে মাহমুদুল্লাহ আউট হন ৯ রান করে। পুরো সিরিজে ব্যর্থ এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। সাব্বির রহমান খেলেন ৭ রানের ইনিংস। তিনি ফিরতেই দল ১০৫ রানে ৬ উইকেট হয়ে যায়। পরে মিরাজ করেন ৮ রান। সৌম্য ছাড়া শুরুর সাত ব্যাটসম্যানের কেউ ২০ রানের কোটায় পৌছাতে পারেনি। শেষ দিকে তাইজুল ইসলাম ৩৯ রান করলে হারের ব্যবধা কমে বাংলাদেশের। তবে ১৪ ওভার থাকতে অলআউট হওয়া দলকে লজ্জা থেকে বাঁচাতে পারেননি তিনি।