ভালো গুড় চেনার উপায়
শুধু খেতেই মজা নয়, রয়েছে নানান স্বাস্থ্যোপকারিতা।
শীতের সময় যে কয়টি খাবারের কদর বাড়ে, সেগুলোর মধ্যে গুড়ও আছে।
পিঠা কিংবা চায়ে- গুড়ের ব্যবহারে অনন্য স্বাদ দিতে পারে। তবে শুধু জিহ্বার প্রশান্তি নয়। গুড়ের রয়েছে নানান স্বাস্থ্যগুণ।
প্রাকৃতিক পরিষ্কারক
শ্বাসনালী, ফুসফুস, অন্ত্র, পাকস্থলী এবং খাদ্যনালী অত্যন্ত কার্যকরভাবে পরিষ্কার করতে পারে গুড়।
এই তথ্য জানিয়ে ভারতের ম্যাক্স হেলথকেয়ার ইন্সটিটিউট’য়ের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ মানজারি চন্দ্র টাইমসঅফইন্ডিয়া ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “তাই দুষিত পরিবেশে কাজ করেন এমন কর্মী যেমন কারখানা কিংবা কয়লা খনির শ্রমিকদের গুড় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।”
এতে থাকে প্রচুর লৌহ, ফলে রক্তশূন্যতা দূর করতে গুড় আদর্শ প্রাকৃতিক সমাধান। পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালনেও উন্নতি ঘটায়।
শরীরে পটাসিয়ামের মাত্রা বাড়ানো এবং পানিশোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে গুড়।
সর্দি-কাশির চিকিৎসা
দস্তা ও সেলেনিয়াম’য়ের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও খনিজে ভরপুর থাকে গুড়। যা শরীরের মুক্ত-মৌলজনীত ক্ষয় কমায় এবং রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ তৈরি করে।
কুসুম গরম পানিতে গুড় গুলে নিয়ে পান করা যায়। চায়ে চিনির পরিবর্তেও গুড় ব্যবহার উপকারী।
হাঁপানির চিকিৎসায়
গুড়ের অ্যালার্জিরোধী উপাদান হাঁপানির চিকিৎসায় আদর্শ।
৫ চা-চামচ হলুদ, ১ চা-চামচ মাখন এবং ছোট এক টুকরো গুড় একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। হাঁপানির কষ্ট কমাতে এই মিশ্রণ প্রতিদিন তিন থেকে চারবার খেতে হবে।
ভালো মানের গুড় চেনার পন্থা
গুড়ের গুণগত মান বুঝতে হবে এর রং দেখে।
রং যত গাঢ়, গুড় ততই খাঁটি। হলদে আভা থাকলে বুঝতে হবে এতে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে।
স্টার্চ বা মাড় মেশানো হয় গুড়ে। পানিতে অল্প পরিমাণ গুড় গোলাতে হবে। যদি কোনো অবশিষ্টাংশ মিশে না যায় তবে বুঝতে হবে এতে মাড় মেশানো হয়েছে।
গুড়ে আলাদা চকচকেভাব ও মসৃণ দেখাতে তেল মেশানো হয়। এটা বোঝার জন্য অল্প গুড় আঙ্গুলে নিয়ে ঘষতে হবে। যদি তেলতেলে ভাব আঙ্গুলে লাগে তবে বুঝতে হবে গুড়ে উচ্চ মাত্রায় খনিজ তেল মেশানো হয়েছে।
গুড়ের প্রাকৃতিক রং হয় গাঢ় বাদামি। দিতে দেখতে কালচে বা বেশি হালকা মনে হয় তবে বুঝতে হবে এই গুড়ে কৃত্রিম রং মেশানো হয়েছে।
রাসায়নিক দ্রব্যও মেশানো হয় গুড়ের স্বাদ গন্ধ বাড়াতে। আসল গুড় মিষ্টির সাথে মাটির গন্ধ মিশ্রিত ঘ্রাণ পাওয়া যাবে। এছাড়া অন্য কোনো গন্ধ পেলে বুঝতে হবে কোনো রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো আছে।
গুড় ধরলে এক গুঁড়া গুঁড়া অনুভত হয়। এর কারণ হল আখের আঁশ। যদি বেশ মসৃণ মনে হয় তবে বুঝতে হবে কোনো না কোনো পদ্ধতিতে গুড়ে পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে।
খাঁটি গুড়ে ঘনত্ব বেশি থাকে। যদি মনে হয় বেশি শক্ত বা নরম তবে ধরে নিতে হবে আলাদা উপকরণ মেশানো হয়েছে।
গুড়ের স্বাদে আলাদা উচ্চ অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বেশি মিষ্টিও না আবার পানসেও নয়। এর বাইরে অন্য রকম স্বাদ মনে হলে বুঝতে হবে গুড়টা হয়ত খাঁটি নয়।