দেশে ‘ভুয়া সনদ’ এর কারণে মানুষের আস্থা নড়ে গেছে এবং সে কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা কমে গেছে বলে মনে করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, “যার করোনা হয়নি, তাকে যদি পজিটিভ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, তাহলে এই দেশ কিসের ওপর চলছে আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারছেন।”
দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাবের সংখ্যা বাড়ানো হলেও জুলাইয়ের শুরু থেকে দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমছে। তাতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও কমে আসছে, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ।
সংবাদপত্রে আসা সেই খবরের প্রসঙ্গ ধরে রিজভী বলেন, “পরীক্ষা কমে গেছে, কারণ মানুষ যাচ্ছে না। অসুস্থ না হয়েও যদি তাকে পজিটিভ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, তাহলে তো তার সবই শেষ। আর যে অসুস্থ আছে, যে আক্রান্ত হয়েছে, তাকে যদি দেয় নেগেটিভ সার্টিফিকেট…।
“এই আতঙ্ক নিয়ে কেনো মানুষ হাসপাতালে যাবে? কেনো পরীক্ষা করাবে? এই কারণে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।”
এই পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, “এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অনাচার-অবিচার, রাজনৈতিক মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়ঙ্করভাবে দমন করার মধ্য দিয়ে। এই দমন করার মধ্য দিয়েই আমরা দেখেছি এই অনাচারগুলো, সমাজের মধ্যে বিশৃঙ্খলাগুলো, এই জাল-জালিয়াতি, এই বাটপারি তৈরি হয়েছে, সমাজের মধ্যে সাহেদদের (রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মোহাম্মদ সাহেদ) উত্থান হয়েছে।”
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিবের ভাষায়, “ভোট নিয়ে যদি জালিয়াতি করে, তাহলে মানুষের অসুস্থতা নিয়ে জালিয়াতি হবে না কেন?”
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সীমানায় এসে অন্য দেশের জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে সেজন্যও সরকারের সমালোচনা করেন রিজভী।
“আমার দেশের স্বাধীনতা কোথায়? আমার মাছ আমি খেতে পারব না, অন্য দেশের লোক এসে মাছ ধরে নিয়ে যাবে। কারণ একটি দায়িত্বশীল সরকার নেই, জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়া সরকার নেই, একটি সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত সরকার নেই বলে আজকে আমার দেশের স্বাধীনতা, আমার সার্বভৌমত্ব সকল কিছু বিপন্ন হয়ে গেছে।”
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আন্দোলন গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে সংগঠনের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব ও সদস্য সচিব আবদুর রহিমের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে ওমর ফারুক, আমির হোসেন, জহিরুল ইসলাম বাশার বক্তব্য দেন।