ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ভোট হচ্ছে শনিবার, যেখানে প্রথমবারের মত অর্ধ কোটির বেশি ভোটারের ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা হয়েছে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। উত্তরে ১ হাজার ৩১৮টি এবং দক্ষিণে ১ হাজার ১৫০টি কেন্দ্রে এই ভোট হবে।
ভোট দিতে যাওয়ার আগে জরুরি কিছু তথ্য জেনে নেওয়া চাই।
কেন্দ্রের নাম ও ভোটার নম্বর
ইভিএম প্রকল্পের অপারেশন প্ল্যানিং অ্যান্ড কমিউনিক্যাশন অফিসার ইন চার্জ স্কোয়াড্রন লিডার কাজী আশিকুজ্জামান জানান, ভোটাররা কয়েকভাবে তাদের কেন্দ্রের নাম ও ভোটার নম্বর জানতে পারবেন।
# এসএমএস: একজন ভোটার মোবাইলের এসএমএস অপশনে গিয়ে ‘PC<Space> NID নম্বর’ লিখে ১০৫-এ পাঠালে ফিরতি এসএমএসে তার কেন্দ্রের নাম ও ভোটার নম্বর পেয়ে যাবেন।
যেমন কারও এনআইডি নম্বর যদি 1234567890 হয়, তাকে এসএমএসে লিখতে হবে PC<Space>1234567890, তারপর পাঠাতে হবে 105 নম্বরে।
# অ্যাপ: ভোটকেন্দ্র খুঁজে পাওয়ার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। https://services.nidw.gov.bd/resources/forms/PollingCenter.apk – এই লিংক থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। সেখানেই পাওয়া যাবে বাকি নির্দেশনা।
# ওয়েবসাইট: নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইংয়ের ওয়েবসাইটে বা https://services.nidw.gov.bd/voter_center
– এই ওয়েব লিংকে গিয়ে যে কেউ তার ভোটকেন্দ্র ও ভোটার নম্বর জানতে পারবেন।
# কিউ আর কোড: নিচের দুটো QR কোড স্ক্যান করেও নির্দিষ্ট লিংকে প্রবেশ করে ভোট কেন্দ্রের তথ্য জানতে পারবেন ভোটাররা।
ভোটার যাচাই
নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পর ভোটার নম্বরের ভিত্তিতে খুঁজে নিতে হবে ভোটকক্ষ। লাইনে দাঁড়িয়ে নির্ধারিত কক্ষে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের সামনে পৌঁছানোর পর যাচাই করা হবে পরিচয়।
ভোট দিতে ভোটারের জাতীয় পারিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড সঙ্গে থাকা বাধ্যতামূলক নয়। তবে জটিলতা এড়াতে সঙ্গে থাকলে সুবিধা হবে বলে জানাচ্ছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা।
কয়েকটি উপায়ে ভোটারের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার।
# স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে
# দশ ডিজিটের স্মার্ট কার্ডের নম্বর
# তের অথবা ১৭ ডিজিটের লেমিনেটেড এনআইডির নম্বর
# ভোটার নম্বর
এর কোনো এক পদ্ধতিতে তালিকায় ভোটারের নাম শনাক্ত করার পর মেলানো হবে তার আঙুলের ছাপ। ছাপ সঠিক হলে ভোটারের ছবি ও ভোট তথ্য সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সামনে একটি মনিটরে ভেসে উঠবে। প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ও ভোটার তা দেখতে পাবেন।
কন্ট্রোল ইউনিট থেকে আঙুলের ছাপ মিললে একজন পোলিং অফিসার ভোটার তালিকায় তার নামের পাশে টিক চিহ্ন দিয়ে রাখবেন। আরেকজন পোলিং অফিসার ভোটারের আঙুলে লাগিয়ে দেবেন অমোচনীয় কালি। এরপর সেই ভোটারকে ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
কোনো কারণে আঙুলের ছাপ না মিললেও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার বিধি মেনে মোট ভোটারের সর্বোচ্চ ১ শতাংশকে ভোটার হিসেবে শনাক্ত করে ইলেকট্রনিক ব্যালট ইস্যু করতে পারবেন।
এরপর ভোট
পরিচয় যাচাই শেষে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ওই ভোটারের জন্য ইলেকট্রনিক ব্যালট ইস্যু করবেন।
ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে গোপন কক্ষে রক্ষিত ইলেকট্রনিক ব্যালট ইউনিটে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের জন্য তিনটি ব্যালট ইস্যু করা হবে। এরপর ভোটারকে পাঠানো হবে গোপন কক্ষে।
গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ভোটার পাবেন তিনটি ইলেকট্রনিক ব্যালট ইউনিট। প্রতিটি ব্যালট ইউনিটের স্ক্রিনে প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক থাকবে। প্রত্যেক প্রতীকের পাশে থাকবে একটি করে সাদা বোতাম।
যাকে ভোট দিতে চাইবেন, তার মার্কার পাশের সাদা বোতামে চাপ দিলেই তা সিলেক্ট হয়ে যাবে। এরপর ব্যালট ইউনিটের নিচে CONFIRM লেখা সবুজ বোতামে চাপ দিলেই ভোট দেওয়া হয়ে যাবে।
CONFIRM লেখা সবুজ বোতামে চাপ দেওয়ার আগে ভোটার সর্বোচ্চ দুইবার তার পছন্দ বদলানোর সুযোগ পাবেন। তৃতীয় যে সাদা বোতামে তিনি চাপ দেবেন, সেটাই তার পছন্দের মার্কা হিসেবে মেশিন গ্রহণ করবে।
একই পদ্ধতিতে তিনটি পদের জন্য নির্ধারিত ব্যালট ইউনিটে ভোট দিতে হবে একজন ভোটারকে। যদি তিনি কোনো পদে ভোট দিতে না চান, তাহলে ওই ব্যালট ইউনিটের নিচে লাল রঙের ‘CANCEL’ বোতামে পরপর দুই বার চাপ দিতে হবে।
তিনটি ব্যালট ইউনিটে ভোটার তার সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরই কেবল তার ভোট গৃহীত হবে। ভোট দেওয়া শেষে তিনি চলে যেতে পারবেন।