পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের চতুর্থ ধাপ শেষে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ৩১৮ জন প্রার্থী জয় পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন ১৩৬ জন। তবে এঁদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তাঁরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেন। আর অন্যান্য দলের প্রার্থীরা চারটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছে।
চার ধাপে মোট ৪৫৮টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ১০৭টি উপজেলার চেয়ারম্যান বিনা ভোটে জয় পেয়েছেন। এঁরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। বাকি যে ৩৫১টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট হয়েছে, সেখানে আওয়ামী লীগ–মনোনীত প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ হওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হন। ৩৫১ উপজেলার মধ্যে ১৪০টি উপজেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের হাতছাড়া হয়। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের সরাসরি ভোটে আওয়ামী লীগের ২১১ জন চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন।
এর বাইরে জাতীয় পার্টি তিনটি এবং জাতীয় পার্টি-জেপি একটি উপজেলায় জয় পেয়েছে। দলীয় নিবন্ধন না থাকায় দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে রাঙামাটিতে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস-এমএন লারমা) প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেন। এই জেলার জুরাছড়ি, বরকল ও বিলাইছড়ি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জেএসএসের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়িতে চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন জেএসএস-এমএন লারমার প্রার্থীরা।
চতুর্থ ধাপে গত ৩১ মার্চ ১০৭ উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শতাংশের হিসাবে এই ধাপে ভোট গ্রহণের হার কিছুটা কমেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ধাপে ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। নির্বাচনে সবচেয়ে কম ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ও ১৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ হারে ভোট পড়েছে যথাক্রমে ফেনীর সদর ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায়। এর বাইরে নরসিংদী সদর উপজেলায় ১৬ দশমিক ৮০ এবং কুমিল্লার চান্দিনায় ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। সর্বোচ্চ ৭০ দশমিক ৮২ শতাংশ ভোট পড়েছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায়।
বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছিল ৪৩ দশমিক ৩২ শতাংশ হারে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ৪১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং তৃতীয় ধাপে ৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ ভোট পড়ে।
ইসি সচিবালয় থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন পদে এখন পর্যন্ত ৪৫৮টি উপজেলায় নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি উপজেলায় একেবারেই ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হয়নি। এসব উপজেলার সব পদের প্রার্থীরাই বিনা ভোটে জয়ী হন। এর বাইরে চেয়ারম্যান পদে আরও ৭৭ জন প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ী হন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১০৭ জন চেয়ারম্যান বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন।