২০০ কোটি ডলারের কর দাবির মামলায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পর আন্তর্জাতিক আদালতেও ভোডাফোন গ্রুপের কাছে হেরে গেছে ভারত সরকার।
শুক্রবার হেগে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল আর্বিট্রেশন ট্রাইবুনাল নেদারল্যান্ডসের কোম্পানিটির পক্ষে রায় দেয় বলে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সুদ ও জরিমানাসহ যে করদায় ভোডাফোনের উপর ভারতের সরকার আরোপ করেছে, তা নেদারল্যান্ড ও ভারতের মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন।
একটি সূত্র বলছে সুদ ও জরিমানাসহ ২০০ কোটি ডলারের কর এবং আরও ১৮৯ কোটি ডলার ভোডাফোনের কাছে দাবি করেছিল ভারত।
আরেকটি সূত্র বলছে, ভারতের এই সিদ্ধান্তকে ‘ন্যায় ও সমতাভিত্তিক আচরণের নীতির লঙ্ঘন’ লংঘন হিসেবে বর্ণনা করে আর্বিট্রেশন ট্রাইবুনাল উল্টো ভারতকে ক্ষতিপূরণ বাবদ মামলার খরচ হিসেবে ভোডাফোনকে প্রায় ৫৫ লাখ ডলার দিতে বলেছে।
ভোডাফোন রায়ের পর যে বিবৃতি দিয়েছে তাতে এই ক্ষতিপূরণের অংক গোপন রাখা হয়েছে। এদিকে রায়ের পর ভোডাফোনের শেয়ারের দাম শুক্রবার আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
পুরনো কর দাবি ও চুক্তি বাতিলকে কেন্দ্র করে কেয়ার্ন এনার্জিসহ অনেকগুলি কর্পোরেট কোম্পানির সঙ্গে প্রায় এক ডজন মামলায় আটকে আছে ভারত সরকার। এসব মামলায় ভারত সরকারকে কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে।
প্রতিবেদনে রয়টার্স বলেছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের আর্বিট্রেশন মামলার সংখ্যা কমাতে ভারত প্রায় ৫০টি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে। এছাড়া করের দাবি অব্যাহত রেখে ও বিদেশি কোম্পানিকে নীতিমালা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দায়মুক্তির বিষয়ে নতুন আইন প্রণয়ন করছে।
২০০৭ সালে হাচিসন হোয়াম্পোয়ার সঙ্গে 1100 কোটি ডলারের অধিগ্রহণ চুক্তির পর থেকে ভারতের সঙ্গে এই কর দাবির মামলায় আটকে আছে ভোডাফোন। অধিগ্রহণের জন্য ভোডাফোনের কাছে কর দাবি করেছিল ভারত সরকার, তার বিরোধিতা করেছিল কোম্পানিটি।
এই মামলায় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত 2012 সালে ভোডাফোনের পক্ষে রায় দিলেও ভারত আইন পরিবর্তন করে পুরনো চুক্তির ওপরও করারোপের বিধান করে।
এরপর ভোডাফোন ইন্টারন্যাশনাল আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনালে মামলা করে, প্রায় ছয় বছর পরে যার রায় দিয়েছে আদালত।