ভোলার বোরহানউদ্দিনে ‘তৌহিদী জনতা’র বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক।
রোববার সকাল ১১টার দিকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিপ্লব চন্দ্র নামে এক যুবকের বিচারের দাবিতে ‘তৌহিদী জনতার’ কর্মী ও সমর্থকরা বিক্ষোভ বের করে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার বলেন, বিক্ষোভকারীরা আমাদের রুমের জানালা ভেঙে ফেললে আমরা প্রথমে শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ি। এতে কাজ না হওয়ায় ওপরের দিকে গুলি চালানো হয়। আমার জানা মতে, একজন পুলিশ সদস্যের বুকে গুলি লেগে গুরুতর আহত হয়েছেন।
ভোলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. লিমন জানান, হাসপাতালে চারজনের মরদেহ রয়েছে। তারা হলেন– বোরহানউদ্দিন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহীন (২১), স্থানীয় কওমী মাদ্রার ছাত্র মাহবুব পাটোয়ারী (১৬) এবং স্থানীয় বাসিন্দা মিজান (৪০) ও মাহফুজ (৪৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ‘অবমাননাকর মন্তব্যের’ অভিযোগে শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ বিপ্লব চন্দ্র নামে এক যুবককে আটক করে। বিপ্লবের বিচারের দাবিতে শনিবার বোরহানউদ্দিনে ‘তৌহিদী জনতার’ ব্যানারে বিক্ষোভ করা হয়। একই দাবিতে আজ রোববার সকাল নয়টায় বিক্ষোভের ডাক দেয় ‘তৌহিদী জনতা’। এ সমাবেশের জন্য পুলিশ অনুমতি দেওয়ার আগেই তারা মাইকিং করে। পরে সমাবেশের জন্য পুলিশ অনুমতি না দিলেও সকাল নয়টা থেকে লোকজন মাঠে জড়ো হতে থাকে। মিছিল করতে না পেরে তারা সেখানেই অবস্থান করেন। পরে পুলিশ ‘বাটামারা পীর সাহেব’ মাওলানা মহিবুল্লাহকে সেখান থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন এবং তাকে ঈদগাহ জামে মসজিদের দোতলায় নিয়ে যান। ওই সময় গুঞ্জন ওঠে, মাওলানা মহিবুল্লাহকে পুলিশ আটক করেছে। এ গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ছুড়লে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বোরহানউদ্দিনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) চার প্লাটুন সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি তারা সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।