মঙ্গল জয়ের স্বপ্নে বিভোর অ্যালিসা কারসন

image-223645-1613774338

গতকাল ১৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলে অবতরণ করল রোভার পারসেভারেন্স। এখনো মনুষ্য বিহীন। কিন্তু যাবে তো! আর সেই যাত্রার স্বপ্নে বিভোর যে মেয়েটি এখন পর্যন্ত নির্বাচিত হয়ে আছে তার নাম অ্যালিসা কারসন। মাত্র ১৯ বছর বয়েসি স্বপ্নবাজ এই কিশোরী মঙ্গল গ্রহে পা রাখতে যাচ্ছে ২০৩৩ সালে! খবরটি বেশ পুরোনোই, তবে কিছু সংবাদ কখনো পুরোনো হয় না। কারসনের সংবাদটিও তাই।

বেশ অবাক করার মতো ঘটনা হলেও, ২০১৫ সালেই অ্যালিসা আনুষ্ঠানিকভাবে নাসার কাছ থেকে খুদে নভোচারী হওয়ার আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করে। অর্থাত্ আমাদের প্রতিবেশী মঙ্গলগ্রহে প্রথম মানব হিসাবে পা ফেলবে এই অনুসন্ধিত্সু কিশোরী। স্পেসএক্স এবং মার্সওয়ান মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর জন্য বেশ কয়েক বছর ধরেই উঠেপড়ে লেগেছে, তারা তাদের সামনের দুই বা তিনটি মহাকাশ মিশনেও অ্যালিসাকে প্রথম খুদে নভোচারী করার আগ্রহ প্রকাশ করছে যা অনেকটা মঙ্গল মিশনের পূর্ব প্রস্তুতি। অ্যালিসা পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় কাটেনি বিজ্ঞানীদের। তাঁরা দিনরাত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন যেন মঙ্গলে সফল অবতরণের পর অ্যালিসা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসে।

অ্যালিসা কারসনের জন্ম ২০০১ সালের ১০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা রাজ্যের হ্যামন্ডে। ছোটবেলা থেকেই অ্যানিমেটেড কার্টুন দেখতে ভালোবাসত অ্যালিসা। তার খুব প্রিয় একটি কার্টুন সিরিজ ‘The Backyardigans’। কার্টুন সিরিজটির একটি পর্বে পাঁচ বন্ধু মিলে কল্পনার মাধ্যমে মঙ্গলে ঘুরতে যাওয়ার কাহিনি অনুপ্রাণিত করে অ্যালিসাকে। তারপর থেকে ছোট্ট অ্যালিসার মনে লালগ্রহ জয়ের স্বপ্ন জাগে, মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে দুঃসাহসিক অভিযানের জন্য অনুপ্রেরণা দেয় অ্যালিসার বাবা বের্ট কারসন। অ্যালিসার বয়স যখন ৭, তার বাবা তাকে আলাবামার হান্টসভিলেতে একটি স্পেস ক্যাম্পে নিয়ে যান।

অ্যালিসা নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এতটাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, ১২ বছর বয়সেই সে আমেরিকার ৯টি অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত নাসার ১৪টি ভিজিটরস সেন্টার পরিদর্শন করে। ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮বার স্পেসক্যাম্প পরিদর্শন করার সুযোগ পায় সে। মিশন মার্সের জন্য ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে অ্যালিসা ডাক পায় ওয়াশিংটন ডিসির নাসা টিভির এমইআর ১০ প্যানেলে, পরবর্তী সময়ে মঙ্গলে প্রথম মানব হিসেবে পা রাখার মিশনে নির্বাচিত সাত ব্যক্তির একজন হিসেবে একটি ডেনমার্ক কোম্পানির অগ্রদূত হিসেবে নির্বাচিত হয়।

২০১৬ সালে অ্যাডভান্সড পসম একাডেমির সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখায় স্বপ্নবিলাসী অ্যালিসা। ইতিমধ্যে অ্যালিসা কয়েকজন নভোচারীর সঙ্গে বেশ কিছু কৃত্রিম মিশনে কাজ করে ফেলেছে। সে অনুযায়ী প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বিমান চালনা, মাইক্রোগ্র্যাভিটি, অক্সিজেনের অভাবে দেহের পরিবর্তন, পানির নিচে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শূন্যতায় ভাসা ইত্যাদি প্রাথমিক কোর্স সম্পন্ন করেছে অ্যালিসা। বর্তমানে অ্যালিসা ফ্লোরিডা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে অ্যাস্ট্রোবায়োলজির ওপর পড়াশোনা করছে।

Pin It