মধ্যবর্তী নির্বাচনের নামে কোনো ইস্যু তৈরির প্রয়োজন নেই: কাদের

image-191652-1602937062

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মধ্যবর্তী নির্বাচনের নামে কোনো টালবাহানার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন নেই মধ্যবর্তী কোনো ইস্যু তৈরির। সময় এলেই নির্বাচন হবে, দেশের মানুষ তখন পরবর্তী সরকার কে হবে তা ঠিক করবে।’

ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার সকালে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একটি মহল দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা বলছে। আমরা বলতে চাই জনগণ সরকারকে ম্যান্ডেট দিয়েছে। সরকার পরিবর্তন চাইলে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। জনগণ চাইলে আমরা আবার আসবো, আর না চাইলে সরে দাঁড়বো। শেখ হাসিনা ক্ষমতার চোরাগলি খোঁজেনা, তার আস্থা এদেশের মাটি, মানুষ ও জনগণের ওপর। ষড়যন্ত্র করে নয়, দেশের উন্নয়নের মাধ্যমেই মানুষের মন জয় করতে চায় আওয়ামী লীগ।’

তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই বলে বিএনপি নেতারা বছরের পর বছর অভিযোগ করে যাচ্ছে। অথচ তারা নিজেরাই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনা। যাদের নিজের দলে গণতন্ত্র নেই, তারা কীভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তন হবে নির্বাচনের মাধ্যমে কিন্তু তারা নির্বাচনে যেতে চায়না। গেলেও তা লোক দেখানো এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে জিতলে বলে, আরও বেশি ভোটে জিততে পারতো, হারলে দায় চাপায় নির্বাচন কমিশন আর সরকারের ওপর। যারা নিজেরা আপাদমস্তক অগণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চায় সিদ্ধহস্ত, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায়না। তাই আবারও বলবো, গণতান্ত্রিক রীতি এবং সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে।’

পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের মানুষকে লজ্জা আর হতাশার সাগরে ডুবিয়েছিল বিএনপি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্নীতির বরপুত্র হাওয়া ভবনের নামে প্রতিষ্ঠা করেছিলো এক খাওয়া ভবন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি দেশ বিদেশে কোথায় বৈঠক করছে কি ষড়যন্ত্র চলছে তার খবর অজানা নয়। বিএনপি ক্ষমতায় যেতে অন্ধকারের চোরাগলি খোঁজে, দেশের ইমেজ নষ্ট করে, তাদের সম্পর্কে জনগণ সতর্ক রয়েছে, জনগণ এখন আর এসবে বিশ্বাস করে না।

সাম্প্রতিককালে করোনা সংকট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনার নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন প্রায় চল্লিশ বিলিয়ন ডলার।

আরো পড়ুন : গ্লোব বায়োটেকের করোনা ভ্যাকসিনকে তালিকাভুক্ত করলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

তিনি বলেন, বিশ্ব ক্ষুধা মুক্তির সূচকে ১৩ ধাপ এগিয়ে ভারত পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। আর্থ-সামাজিক প্রায় সকল সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য বাংলাদেশ।

করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক দেশ আবার লকডাইনের দিকে যাবার কথা ভাবছে। আমাদের দেশে মৃত্যুর হার ও আক্রান্ত কম বলে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। শীতকাল আসন্ন, শীতে সংক্রমণ বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা বার বার সতর্ক করছেন। অথচ আমাদের উদাসীনতা দেখলে মনে হয় করোনা বলে কিছু নেই। অনেকে মাক্স পরে না। আসন্ন ঝুঁকি মোকাবিলায় সকলকে মাক্স পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। শীতকালে ঝুঁকি কমাতে সর্বোচ্চ সচেতনতা আমাদের সুরক্ষার হাতিয়ার।’

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিকের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বক্তব্য রাখেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল -বিইউপির বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম।

Pin It