মন্ত্রীসভার বৈঠকে খসড়া আইন চূড়ান্ত অনুমোদন

safe_image

‘সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০’ এর খসড়া আইন চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা। সোমবার বেলা ১১ টায় তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এই বিশ^বিদ্যালয়ের খসড়া আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর ইনিশিয়েটিভ। এই কনসেপ্টটা ওনার মাথা থেকে এসেছে যে- রিমুট এলাকাতেও বিশ্ববিদ্যালয় থাকা দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ জেলায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে ‘সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়।
খসড়া আইনের ওপর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ করে গত বছরের ২২ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা বৈঠকে খসড়া আইনটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়। এরপর আইন মন্ত্রণালয় হতে ভেটিং গ্রহণ করা হয়।

অন্যান্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন যে রকম সেটা অনুসরণ করেই এই আইন করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

খসড়া আইনে ৫৫ টি ধারা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনে সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও সংজ্ঞা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য ধারাগুলোর মধ্যে চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, কোষাধ্যক্ষ, নিয়োগ, সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, অর্থ কমিটি সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ রয়েছে।

এছাড়া আইনের আলোকে ২১ টি অনুচ্ছেদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধি খসড়া আইনের সঙ্গে সংযুক্ত আছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ নিয়ে বর্তমানে বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও প্রকৌশল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ালো ২০ টি। ১৯টি কার্যক্রমে রয়েছে।
আর চারটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪২ টি। এরমধ্যে সাধারণ ১৭ টি, কৃষি ও ভেটেরিনারি ৬টি।
আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৫টি।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় প্রতি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কর্মসূচীর আওতায় বর্তমানে ৩২টি জেলা বাকি রয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এ প্রতিবেদককে বলেন,‘আমি আনন্দিত, সুনামগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি আজকের বৈঠকেও বলেছেন, বৈশিষ্টগতভাবে সুনামগঞ্জ-গোপালগঞ্জের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। সুনামগঞ্জবাসীর প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা অবশ্যই মনে রাখবে জেলাবাসী।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিব সহ সকলেই এই কাজে সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হাওর অঞ্চলের মানুষের জন্য আরো কাজ করতে চাই। হাওর অঞ্চলের মানুষের জীবন মান উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কাজ অব্যাহত থাকবে।

প্রসঙ্গত. সুনামগঞ্জ জেলাবাসীর বহুদিনের দাবী সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের খসড়া আইন গত ৩১ ডিসেম্বর সোমবার মন্ত্রী পরিষদের সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদন পায়। এরপর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের নেতৃত্বে সুনামগঞ্জে বিশাল শোভাযাত্রা হয়।

এছাড়াও, মন্ত্রিসভা ‘জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ২০২০’এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে। কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমে এ নীতিটি বাস্তবায়ন করা গেলে কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী সম্প্রসারণ সেবা প্রদানের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে জানিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, কৃষি শিক্ষা, গবেষণা, বিপণন ও সম্প্রসারণ সেবার সাথে সম্পৃক্ত অংশীজনসহ কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের পারস্পরিক মতবিনিময়ের মাধ্যমে চাহিদাভিত্তিক গবেষণার বিষয়বস্তু নির্ধারণ এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ‘জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ২০২০ প্রণীত হয়েছে।

Pin It