পবিত্র কুরআন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর নাজিল হওয়া ঐশীগ্রন্থ। আল-কুরআনের ঐশীগ্রন্থ হওয়ার প্রমাণ মেলে নানাভাবে।
সৃষ্টির সূচনা থেকেই কুরআন মজিদ যে লাওহে-মাহফুজে সুরক্ষিত ছিল, তার উল্লেখ এ গ্রন্থেই রয়েছে, ‘বরং তা সেই কুরআন যা লাওহে মাহফুজে সুরক্ষিত রয়েছে’ (সূরা বুরুজ, আয়াত ২১-২২)।
এরপর দুই পর্যায়ে তা নাজিল হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে সম্পূর্ণ কুরআন একই সঙ্গে এক লাইলাতুল কদরে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা নিকটতম আসমান ‘বাইতুল মামুরে’ নাজিল হয়েছিল। এটি বাইতুল-ইজ্জত নামেও পরিচিত, যা কাবা শরিফ বরাবর প্রথম আসমানে অবস্থিত ফেরেশতাদের ইবাদত ঘর।
এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে ২২ বছর ৫ মাস ১৪ দিনে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দিলে আল্লাহ পাকের বিশেষ দূত ফেরেশতা জিবরাঈল (আ.)-এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে তা নাজিল করা হয় (আল-এতকান, ১ম খণ্ড, পৃ. ৪১)।
সহিহ বর্ণনায় জানা যায়, দ্বিতীয় পর্যায়ের অবতরণ ও শুরু হয়েছিল লাইলাতুল কদরে।
সংখ্যাতত্ত্বে এই ঐশীগ্রন্থ মহাবিশ্বের এক চরম বিস্ময়! কুরআন শরিফের মোট ১১৪টি সূরায় জান্নাত ও জাহান্নামের ওয়াদার আয়াত ১০০০টি, ভীতিপ্রদর্শক আয়াত ১০০০টি, আদেশসূচক আয়াত ১০০০টি, নিষেধসূচক আয়াত ১০০০টি, উদাহরণ সংবলিত আয়াত ১০০০টি, ঘটনা সংবলিত আয়াত ১০০০টি, হালাল নির্দেশক আয়াত ২৫০টির মতো, হারাম নির্দেশক আয়াত ২৫০টি, তাসবিহ সংবলিত আয়াত ১০০টি এবং নানা প্রসঙ্গে আয়াত ৬৬টি।
পবিত্র এই গ্রন্থে অনেকবার একের সঙ্গে অন্যের তুলনা করা হয়েছে। এই তুলনীয় নাম বা বস্তু দুটিকে আল্লাহতায়ালা সমান সংখ্যাতেই উল্লেখ করেছেন।
এখানে ‘তিনি বললেন’ এবং ‘তারা বলল’ শব্দ দুটি এসেছে ৩৩২ বার করে। ‘আব্দ (গোলামি)’ ও ‘আবিদ (গোলাম)’ কথা দুটি এসেছে ১৫২ বার করে। ‘জীবন’ ও ‘মৃত্যু’ ১৪৫ বার, ‘দুনিয়া’ ও ‘আখেরাত’ ১১৫ বার, ‘কষ্ট’ ও ‘ধৈর্য’ ১০২ বার, ‘শয়তান’ ও ‘ফেরেশতা’ ৮৮ বার, ‘বেহেশত’ ও ‘দোজখ’ ৭৭ বার, ‘বিপর্যয়’ ও ‘কৃতজ্ঞতা’ ৭৫ বার, ‘চন্দ্র’ ও ‘সূর্য’ ৩৩ বার, ‘জাকাত’ ও ‘জাকাত প্রদানের ফলে বরকত’ ৩২ বার, ‘ঈমান’ ও ‘কুফর’ ২৫ বার, ‘পবিত্র’ ও ‘অপবিত্র’ সাতবার, ‘গরম’ ও ‘ঠাণ্ডা’ পাঁচবার করে এসেছে।
কুরআনে ‘সাত আসমান’ (সাব্য়া সামাওয়াত) কথাটি সাতবার রয়েছে; আসমানগুলোর সৃষ্টি (খালাকাস সামাওয়াত) কথাটিও সাতবার এসেছে। সাতটি আসমান আছে বলেই হয়তো আসমান প্রসঙ্গে এমন সংখ্যা। আল্লাহু আকবার, আল্লাহ ভালো জানেন।