সময় থাকতেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনশন কর্মসূচিতে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘এখনও সময় আছে, কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন।’
মঙ্গলবার আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব এ সময় বলেন, খালেদা জিয়া এতই অসুস্থ যে মাথা সোজা করে বসতে পারছিলেন না। তার পুরো শরীরে যন্ত্রণা-ব্যথা। তিনি কোনো কিছু খেতে পারছেন না। কিছু খেলেই বমি হচ্ছে। অর্থাৎ কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ (দক্ষিণ) উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে এ অনশন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী। এতে বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু আশরাফ খন্দকার ও মোজাদ্দেদ আলী বাবু।
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক। একমাত্র তিনিই গণতন্ত্রের পাশাপাশি বর্তমান সরকারকেও রক্ষা করতে পারবেন।’
বিচার ব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার এমন এক বিচার ব্যবস্থার রাষ্ট্র ও সমাজ তৈরি করেছে, যেখানে কোনো বিচার নেই। সর্বোচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত পর্যন্ত সব কিছুই চলছে সরকারের নির্দেশে।’
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় অন্য আসামিদের জামিন প্রসঙ্গ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘একই মামলায় অন্য আসামিরা জামিন পেলেও খালেদা জিয়ার জামিন হচ্ছে না। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয়, সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে, অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে, মিথ্যা-গায়েবি মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার করে তাদের ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে। কিন্তু এভাবে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সংকট বিএনপির নয়, গোটা জাতির।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘বর্তমান সরকার ভীতসন্ত্রস্ত। তাই পরিকল্পিতভাবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়ে খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন জাতির জন্য অনিবার্য। যে কোনো প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে এই অনিবার্য কাজটি করতে হবে।’ তিনি এ জন্য নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।