মান নিয়ন্ত্রণে কঠোর হতে বিএসটিআইকে শিল্পমন্ত্রীর নির্দেশ

image-55786-1558363635

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন পণ্যের মানের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনকে (বিএসটিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০১৯ উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁস্থ বিএসটিআই মিলনায়তনে আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক পরিমাপ পদ্ধতির একক মৌলিকভাবে উত্তম’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ‘পণ্যের মান এবং পরিমাপ সম্পর্কিত যে কোনো ধরণের অনিয়ম প্রতিরোধে বিএসটিআইকে আপোসহীন হতে হবে। কারণ জাতীয় মান নির্ধারণী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পণ্য ও সেবার গুণগত মান সুরক্ষা বিএসটিআই’র পবিত্র দায়িত্ব। সাম্প্রতিককালে বিএসটিআই’র কার্যক্রম প্রশংসার দাবি রাখে। বিএসটিআই কর্মকাণ্ডের ফলে মানুষের বিবেক নাড়া দিয়েছে। ম্যানেজ করে চলার দিন শেষ। সব ধরণের ভয়-ভীতি, প্রলোভন ও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

তিনি জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই বিএসটিআইকে একটি শক্তিশালী ও আন্তর্জাতিকমানের প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। তার অভিপ্রায় অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বিএসটিআই’র সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির টেস্টিং রিপোর্ট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করতে ইতোমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। পণ্যের মান এবং ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিত করতে হলে জেলা পর্যায়ে বিএসটিআই’র অফিস সম্প্রসারণ করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের জনবল বৃদ্ধি করতে হবে। বিএসটিআই’র একার পক্ষে পণ্য ও সেবার মান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। পণ্যের উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের সৎ থাকতে হবে।’ এ সময় ওজন ও পরিমাপে কারচুপি এবং পণ্যে ভেজাল না দেয়ার শপথ নিতে তিনি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘বছরের শুরু থেকেই বিএসটিআই’র কার্যক্রমে গতি এসেছে। ছুটির দিনেও সংস্থাটির লোকজন কাজ করছে। সম্প্রতি বিএসটিআই ৫২ টি নিম্নমানের পণ্যের তালিকা প্রকাশ করেছে। উচ্চ আদালত এ বিষয়ে কিছু নির্দেশনাও দিয়েছে। বিএসটিআই তার সীমিত জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে। এভাবে বিএসটিআই’র লোগো মানুষের আস্থার জায়গায় পৌঁছাবে।’

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসটিআই মহাপরিচালক মো. মুয়াজ্জেম হোসাইন। তিনি বলেন, ‘এ প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরি, প্রোডাক্টস সার্টিফিকেশন সিস্টেম এবং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সার্টিফিকেশন ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। ফলে এসব পণ্যের অনুকূলে বিএসটিআই’র মান সনদ আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে। প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশের ২১টি পণ্যের অনুকূলে বিএসটিআই প্রদত্ত মানসনদ গ্রহণ করেছে। আরও কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিএসটিআই’র কেমিক্যাল ও ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরির ৩৫টি পণ্যের ৪১১টি প্যারামিটার ইতোমধ্যে এ্যাক্রেডিটেশন অর্জন করেছে।’ ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিএসটিআই’র পরিচালক (মেট্রোলজি) মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা।

Pin It