মামলা-হুলিয়ায় আন্দোলন দমানো যাবে না: ফখরুল

fakhrul-130121-01

মামালা-হুলিয়া দিয়ে গণতন্ত্রের কোনো আন্দোলন দমানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বুধবার দুপুরে এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, “আজকে তারেক রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তা নতুন কোনো ঘটনা নয়। এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে প্রায় ১২ বছর ধরে এখানে অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতনের একটা স্টিম রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করছে যে, এই অত্যাচার-নির্যাতন-মামলা-হুলিয়া দিয়ে এদেশের মানুষকে দমন করে রাখা যাবে, কিন্তু তা সম্ভব নয়।

“আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, তারেক রহমান সাহেব একা নন। এই দেশের ১৬ কোটি স্বাধীনতাকামী, গণতন্ত্রকামী মানুষ আজকে তার (তারেক রহমান) সঙ্গে আছে। সুতরাং এই মিথ্যা মামলা দিয়ে, হুলিয়া দিয়ে গণতন্ত্রের কোনো আন্দোলনকে দমন করা যাবে না।”

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘ভুয়া-বানোয়াট-মিথ্যা’ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এই মানবন্ধন হয়। সারাদেশে জেলা ও মহানগরে একযোগে এই কর্মসূচি করছে বিএনপি।
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা তো বিচার বিভাগকে শেষ করে দিয়েছেন। এই বিচার বিভাগের আর কোনো মর্যাদা আপনারা রাখেননি। তারেক রহমান সাহেবকে একটা মামলাতে পুরোপুরিভাবে নির্দোষ ও খালাস দেওয়া হয়েছিলে। পরবর্তিকালে আবার সেই মামলাকে আপনারা হাই কোর্টে নিয়ে সাজা দেবার ব্যবস্থা করেছেন।

“দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় আপনারা সাজা দেবার ব্যবস্থা করেছেন। দেশে কোনো আইনের শাসন এখন নেই।”

করোনাভাইরাসের টিকা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আপনারা চুরি এবং লুটপাট করে একটা ডাকাতির রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন এই বাংলাদেশে। এই যে কোভিড-১৯ আজকে এত বড় ভায়াবহ একটি মহামারী, এই মহামারীতে আপনারা লুটপাট বন্ধ করেননি।
“এখন ভ্যাকসিন আমদানির মধ্য দিয়ে লুটপাটের ষড়যন্ত্র করছেন। যেখানে ভ্যাকসিন ভারতে বিক্রি করছে ২ টাকা ৪০ পয়সা করে, সেখানে আপনারা বিক্রি করবেন ৫ টাকা করে বাংলাদেশের মানুষের কাছে। অর্থাৎ এই টাকা সম্পূর্ণ আপনারা নিয়ে যাবেন।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “জনগণ প্রস্তুত আছে। আমাদের কথার চেয়ে কাজ দরকার বেশি। জনগণ চায় আমরা রাস্তায় নামি। জনগণ আমাদের সাথে নামবে। সুতরাং এই মুহূর্ত থেকে আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। সে কারণে দলকে ঐক্যবদ্ধ করার মধ্য দিয়ে পাড়া-মহল্লা-গ্রাম-গঞ্জে, যে যেখানে আছেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করুন। ঐক্যের ডাক দিয়ে বলুন ‘এক দফা এক দাবি, হাসিনা তুই কবে যাবি’।”

তারেক রহমানকে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলি, বিএনপি আপনাকে উৎখাত করতে চায় না। দেশের মানুষ আপনাকে চায় না। এদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে ঠেকাবেন কি করে? তারেক রহমান তো পরবর্তি প্রধানমন্ত্রী, এটা মনে রাখেন না কেন?”
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, “স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে নব্বইয়ের আন্দোলনের চেতনায় বাংলাদেশে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টির মধ্য দিয়ে হাসিনাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে আমরা অবশ্যই সরাব।”

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, জিয়া পরিবারের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এত প্রতিহিংসা কেন? উনার প্রতিহিংসা থামবে না। বাজ পাখির মতো, ইগলের মতো প্রতিহিংসার পাখা উনার ঝটপট করে সবসময়।”
মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার ও উত্তরের আবদুল আলীম নকির পরিচালনায় সমাবেশে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, শিরিন সুলতানা, আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, জাসাসের হেলাল খান, ছা্ত্রদলের ফজলুল রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Pin It