শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘শিল্প মালিকরা সবসময় লাভ খোঁজে, তাদের মধ্যে মানবিক দিক কম। তবু কলকারখানার মালিকদের সাথে সমন্বয় করেই শ্রমিকদের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে শুধু নারী বলে নয়, সব শ্রমিকের স্বার্থকেই দেখতে হবে। বর্তমান সরকার একটি মানবিক সরকার আমরা সবকিছুর সমন্বয় করে আরও এগিয়ে যেতে চাই।’
সংলাপে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন কেয়ার বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়া চৌধুরী। সংলাপের বিষয় উপস্থাপন করেন কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক (উইমেন এ্যামপাওয়ারমেন্ট) হোমায়রা আজিজ এবং আসিফ ইমরান খান।
সংলাপে সংসদ সদস্যদের মধ্যে সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন— অ্যারোমা দত্ত এমপি, ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, শিরিন আখতার এমপি, শামসুন্নাহার এমপি, খোন্দকার মমতা হেনা লাভলী এমপি, রওশন আরা মান্নান এমপি, রুমানা আলী এমপি, কাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, সেলিম আলতাফ জর্জ এমপি, অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আকতার হোসেন এমপি, অ্যাডভোকেট আ ক ম সারোয়ার জাহান বাদশাহ এমপি। বিভিন্ন সংসদ সদস্য তাঁদের বক্তব্যে কর্মস্থলে নারীর অবদান ও সুরক্ষার বিষয়টি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করবেন বলে মতামত প্রদান করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, আইএলও কনভেনশন ২০১৯ যে মহত্ লক্ষ্য নিয়ে সামনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা অর্জনে আমাদের সবাইকেই স্বচেষ্ট হতে হবে। যে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আশায় আমরা আলোচনা করছি তা বাস্তবায়নে অবশ্যই আমাদের জাতীয় প্রেক্ষাপটকে মাথায় রাখতে হবে। সুচিন্তিত, সম্মিলিত এবং সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কামরুল আহসান, টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স এসোসিয়েশন সভাপতি জনাব আবুল হোসাইন, বিলস্ এর নির্বাহী সদস্য নাসরিন আক্তার ডিনাসহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য যে, গত বছরের জুন মাসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলন-২০১৮তে বিভিন্ন রাষ্ট্রে সরকার, নিয়োগকর্তা এবং শ্রমিক প্রতিনিধিরা কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা এবং হয়রানি নির্মুল করার জন্য আইএলও কনভেনশন ও সুপারিশমালা গ্রহণ করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী জুন ২০১৯ এ অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক শ্রম কনভেনশনে স্বাক্ষর করার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে কেয়ার বাংলাদেশ ও উন্নয়ন সমন্বয়-এর যৌথ উদ্যোগে উল্লিখিত কনভেনশনের প্রাক্কালে জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অবদান, কর্মস্থলে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার গুরুত্ব এবং সর্বোপরি আইএলও কনভেনশনের আলোকে কর্মস্থলে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধে করণীয় বিষয়ে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।