চাষাবাদ লাভজনক হয়ে উঠায় যশোর ও আশপাশের জেলার পাটের উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে। আর পাটের এই সুদিনে এটির বিচিত্র ও বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে কাজ করা একটি অফিস জেলা থেকে সরিয়ে অন্য জেলায় নেওয়া হচ্ছে।
এখানকার ‘বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্র ও জুট ডাইভারসিটি প্রমোশন সেন্টারটি’ রাজশাহীতে চলে যাচ্ছে।
ফলে অফিসটি স্থানান্তর হলে জেলায় পাটের বহুমুখী পণ্যের উৎপাদন ব্যাহত হবে। যেটি পাটজাত পণ্য তৈরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ও জনবলের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের সিদ্ধান্তে যশোরে ১১ বছর ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসা এই অফিসটি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, পাট পণ্যের বিকাশের জন্য জেলায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে বহুমুখী পাট শিল্প উদ্যোক্তা সেবা কেন্দ্র (জেইএসসি) ও জুট ডাইভারসিটি প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি)। অফিসটির পরিচালিত এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে পাট পণ্যের ডিজাইন ওয়ার্কশপ, মার্কেটিং, ডাইং ও ফিনিশিংসহ গুণগত মান উন্নয়নের উপর প্রশিক্ষণ। এসব ছাড়াও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন খরচ ও মূল্য নির্ধারণের ওপরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পাশাপাশি পাট পণ্যের কেনাবেচার সুযোগ সৃষ্টির জন্য অন্যান্য সংস্থা আয়োজিত মেলায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করে এই দপ্তরটি। ফলে প্রতিষ্ঠানটির সচেতনতা কর্মশালা ও দক্ষতা-উচ্চ দক্ষতা প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে পাটপণ্য উৎপাদনে নিয়োজিত অনেকে লাভবান হয়েছেন এবং এখনও হচ্ছেন। এমন অবস্থায় পাটজাত পণ্য উৎপাদনে জড়িত মানুষদের জন্য এ ধরনের একটি উপকারী প্রতিষ্ঠান যশোর থেকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোরালে দাবি উঠেছে। কারণ অফিসটি এখান থেকে উঠে গেলে এসব সুবিধাবঞ্চিত হবে এই অঞ্চলের মানুষ।
জানা গেছে, শুধুমাত্র ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, নরসিংদি, জামালপুর, টাঙ্গাইল ও যশোরে জেইএসসি ও জেডিপিসির অফিস রয়েছে। আর এমন একটি অফিস যশোরের কৃষিনির্ভর অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এটির স্থানান্তর বন্ধ জরুরি বলে মনে করছেন সচেতন যশোরবাসী।
এ প্রসঙ্গে যশোরের হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান ভূমির স্বত্বাধিকারী নারী উদ্যোক্তা নবনীতা সাহা তপু বলেন, সারাবিশ্বেই পাটজাত পণ্যের চাহিদা ও ব্যবহার বাড়ছে। ফলে পাটজাত পণ্য উৎপাদনে উদ্যোক্ত সৃষ্টি হচ্ছে। বাজার সৃষ্টি হওয়ায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে এ নিয়ে আগ্রহও বাড়ছে। এই অফিসটি পাটজাত পণ্য উৎপাদন, বিপণনে উদ্যোক্তাদের পাশে রয়েছে। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তারা উপকৃত হচ্ছে। এই অবস্থায় অফিসটির স্থানান্তরে এই উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে রাজশাহীতে আরও একটি অফিস স্থাপন করা হোক। কিন্তু যশোর থেকে এই অফিসটি স্থানান্তর সমীচীন হবে না।