আসন্ন ব্রেক্সিটকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়নেই (ইইউ) থেকে যাওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন শীর্ষ কয়েকজন জার্মান নাগরিক।
‘টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত এ চিঠিতে সই করেছেন ৩১ জন৷ তাদের মধ্যে আছেন, ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের নেতা, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলের সম্ভাব্য উত্তরসূরিসহ জার্মানির একদল রাজনীতিক এমনকী অ্যাথলেট, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সেলিব্রেটিরাও৷
চিঠিতে আবেগঘন কিছু কথার সঙ্গে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তাও৷ আসন্ন ‘ব্রেক্সিট’এর ফলে ব্রিটিশদের অনেক কিছুই ইউরোপীয়দের থেকে দূরে সরে যাবে৷ ইউরোপীয় জীবনযাত্রা থেকে হয়ত হারিয়ে যাবে ব্রিটিশ সংস্কৃতির অনেককিছুই।
তাই আবেগে ভরা ভাষায় চিঠিতে বলা হয়েছে, “‘ইউরোপীয় হিসাবে আমাদের জীবনযাত্রার অপরিহার্য অঙ্গ অসংখ্য ব্রিটিশ নাগরিকের পাশাপাশি তাদের সংস্কৃতিও৷ আমরা তোমাদের মিস করব৷’’
যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য বা সংস্কৃতি, যা ছাড়া ইউরোপীয় জীবনযাত্রা অনেকটাই ম্লান- সেগুলোও তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, ব্রিটিশ কৌতুকের মজা, সন্ধ্যায় পাবে গিয়ে ‘এল’ পান, বা দুধ দিয়ে চা পান– এসবই এতদিন ছিল ইউরোপীয় জীবনযাত্রার অঙ্গ৷ কিন্তু যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে (ব্রেক্সিট) এ সবই বদলে যেতে পারে।
অন্যদিকে, ইতিহাসের সঙ্গী হিসাবে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের দীর্ঘ পথ পরিক্রমার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে ইউরোপের ঐতিহাসিক গঠনের পেছনে ব্রিটিশদের অবদান স্বীকার করে নিয়ে তাদেরকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে একটি নতুন জার্মানি গড়ে ওঠার সময় যুক্তরাজ্য যেভাবে পাশে থেকেছে, তা জার্মানি ভুলে যায়নি, ভুলে যাবে না বলে চিঠিতে জানিয়েছেন লেখকরা৷
তারা বলেন, “ইউরোপীয় বলতে আমরা আজ যা বুঝি, সেসবকিছুর সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে যুক্তরাজ্য৷ তাই ইউরোপে তাদের অভাব অপূরণীয় হয়ে থাকবে।”
ব্রিটিশ জনগণের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার রায়কে শ্রদ্ধা করেন বলে জানালেও চিঠির লেখকরা বলেন, তারা চিরতরে চলে যেতে চাইলেও জার্মানি এবং ইউরোপ সবসময়ই তাদের বন্ধু থাকবে।
‘ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তনীয় নয়’ উল্লেখ করে শীর্ষ ওই জার্মানরা আরো বলেন, “আমাদের দ্বার সবসময়ই খোলা থাকবে। আমরা হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকেই চাই তারা থাকুক।”