যুদ্ধবিমানে ‘রেডার লক’, জাপানে চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব

j-15-aircraft-081225-01-1765221641

ওকিনাওয়ার মূল দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব আন্তর্জাতিক জলসীমায় চীনের জে-১৫ যুদ্ধবিমানগুলোর বিপজ্জনক কার্যকলাপের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

জাপানের যুদ্ধবিমানে চীনা যুদ্ধবিমান দুইবার ফায়ার কন্ট্রোল রেডার তাক করার ঘটনায় চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে জাপান।

রোববার চীনা রাষ্ট্রদূত উও জিয়াংহাওকে তলব করে এ ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। জাপান এ ঘটনাকে “অত্যন্ত দুঃখজনক” ও বিপজ্জনক হিসেবে বর্ণনা করেছে।

ওকিনাওয়ার মূল দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব আন্তর্জাতিক জলসীমায় চীনের জে-১৫ যুদ্ধবিমানগুলোর এই বিপজ্জনক কার্যকলাপের প্রতিবাদই জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে রাষ্ট্রদূত তলব করে।

জাপানের যুদ্ধবিমানকে রেডার লক করার ঘটনায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা কেউ হতাহত হয়নি। তবে জাপানের উপর কার্যত এটাই ছিল চীনের প্রথম হামলা-পূর্ববর্তী আগ্রাসী মনোভাব। যদিও চীন সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

যখন কোনও রেডার সিস্টেম (যুদ্ধবিমান বা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রেডার) একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চিহ্নিত করে, নিশানা করে এবং সেটির গতিবিধি অনুসরণ করে তখন তাকে ‘রেডার লক’ বলে গণ্য করা হয়।

মূলত এটি হল সম্ভাব্য কোনও হামলা বা হুমকির সংকেতবাহী সামরিক বার্তা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাচি চীনের এমন কর্মকাণ্ডের কড়া জবাব দেওয়ার অঙ্গীকারও করেছেন।

জাপান জলপথ ও আকাশপথে নজরদারি জোরদার করা এবং চীনের সামরিক কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য সব ধরনের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

চীন-জাপান বর্তমান সংঘাতের সূচনা গত ৭ নভেম্বর। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সেদিন জাপানের পার্লামেন্টে বলেছিলেন, চীন তাইওয়ান দখল করতে উদ্যোগী হলে তারা চুপ করে বসে থাকবেন না।

তিনি বলেন, “প্রয়োজনে তাইওয়ানকে সামরিক সাহায্য করা হবে।” এরপরই জাপানে সরাসরি সামরিক আগ্রাসনের হুমকি দিয়েছিল চীন।

চীনের প্রতিরক্ষা দপ্তর বলেছিল, “তাইওয়ান নিয়ে নাক গলানো বন্ধ না করলে ‘ধ্বংসাত্মক সামরিক পদক্ষেপের’ মুখে পড়বে জাপান।’’

চীনের হুমকি ঠেকাতে বুধবার তাইওয়ান উপকূল থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত ইয়োনাগুনি দ্বীপে ক্ষেপণাস্ত্র এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েনের প্রস্তুতি শুরু করেছে জাপান।

দুই দেশ মারাত্মক কূটনৈতিক বিরোধেও জড়িয়ে গেছে। চীনও জাপানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে, জাতিসংঘে অভিযোগ জানিয়েছে, চীনা নাগরিকদের জাপান ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে বলেছে এবং জাপানি সামুদ্রিক খাবার আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।

এছাড়া জাপানি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চলচ্চিত্রেও এর প্রভাব পড়েছে। জাপানের সামরিক মুখপাত্র মিনোরু কিহারা বলেছেন, জাপান শান্তিপূর্ণ কিন্তু দৃঢ় অবস্থানে থাকবে এবং দেশের আশপাশের সমুদ্রসীমায় চীনা বাহিনীর কার্যকলাপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

Pin It