বিশেষ কিছু নয়, নিত্য দিনের খাদ্যাভ্যাসেই রয়েছে এসব খাবার।
সাধারণত পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে ‘ডিপ ভেইন থ্রমবোসিস’ বা ‘ডিভিটি’।
রক্ত ঘন হয়ে জমাটা বাঁধা শুধু আক্রান্ত স্থানেই রক্তসঞ্চালনে বাধা দেয় না বরং এই জমাট রক্ত হঠাৎ ছুটে গিয়ে চলে যেতে পারে হৃদপিণ্ডে বা ফুসফুসে। ফলাফল মৃত্যু।
যারা অনেক্ষণ বসে থেকে কাজ করেন, কিংবা কোথাও ভ্রমণ করতে গিয়ে প্লেনে বা বাসে অনেক্ষণ বসে থাকতে হয় তাদের এই ধরনের সমস্যা বেশি হয়। আর এই সমস্যা দূর করা অন্যতম উপায় হতে পারে খাদ্যাভ্যাসে কিছু খাবারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া।
পুষ্টি-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এমন কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জানানো হল।
পানি: রক্ত জমাট বাঁধার অন্যতম কারণ হল পানির স্বল্পতা। পানির অভাবে রক্ত ঘন হয়ে যায় ও জমাট বাঁধে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত।
খাবারে মসলার ব্যবহার: রক্ত জমাট বাঁধা থেকে রক্ষা পেতে খাবারে মসলা যেমন- রসুন যোগ করুন। প্রাচীন মিশরে ওষুধ হিসেবে এর ব্যবহার শুরু হয়েছিল। রসুন কড়া স্বাদ ও গন্ধযুক্ত। এটা রক্ত পাতলা করতে সহায়তা করে।
রসুন ছাড়াও ‘স্যালিসাইলেটস’ সমৃদ্ধ কারি-পাতা, হলুদ, গোলমরিচ, পাপ্রিকা, যষ্টিমধু, পুদিনা ও আদা ইত্যাদি রক্ত পালতা করতে সাহায্য করে।
খাঁটি ভার্জিন অলিভ অয়েল: যেকোনো ভোজ্য তেলের মধ্যে জলপাইয়ের তেল সার্বিকভাবে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা থেকে বাঁচতেও এটা কার্যকর।
দ্যা অ্যামেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন থেকে জানা যায়, ভার্জিন জলপাইয়ের তেলের ‘ফেনল’ নামক উপাদান রক্ত জমাট বাঁধায় এমন উপাদান কমাতে সহায়তা করে।
রান্নায় জলপাইয়ের তেল সহজেই ব্যবহার করা। তবে রক্ত জমাট বাঁধা এড়াতে জলপাইয়ের তেলের সঙ্গে রসুন বা অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে সালাদ পরিবেশন করতে ব্যবহার করতে পারেন।
বাদাম ও শস্য: বাদাম ও শস্য ভিটামিন ই সমৃদ্ধ যা রক্ত পাতলা করতে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ই খাওয়া কেবল প্রথমবার রক্ত জমাট বাঁধা থেকে বিরত রাখে না বরং যাদের এই সমস্যা আগে দেখা দিয়েছে তাদের পুনরায় রক্ত জমাট বাঁধা থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে।
আখরোট, কাঠ-বাদাম, ওটস, গম ও ডাল-জাতীয় খাবার ভিটামিন এ সমৃদ্ধ।
মাছ ও তিসি: ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার রক্ত জমাট বাঁধা ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। গবেষণায় দেখা যায়, ১.৮ গ্রাম ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড খাবারে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা রক্ত প্রবাহ উন্নত করে এবং ধমনীর পুরুত্ব কমাতে সহায়তা করে।
ওমেগা-থ্রি সমৃদ্ধ মাছ যেমন- স্যামন, হেরিং, ম্যাকারেল, ট্রাউট ইত্যাদি। দেশি মাছের মধ্যে রয়েছে পাঙ্গাস, কাতলা বা ইলিশ মাছ। তিসি ও সূর্যমুখীর বীজ ওমেগা-থ্রি’র ভালো উৎস।