আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসপন্থী নব্য জেএমবির শীর্ষস্থানীয় এক সদস্যকে গ্রেফতার করার দাবি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম শিব্বির আহমাদ।
গ্রেফতার শিব্বির আহমাদ ঢাকার বাসাবো সাইদিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৭ সালে দাখিল পাস করার পর বিভিন্ন মসজিদের মুয়াজ্জিন ও সহকারী ইমামের কাজের অন্তরালে উগ্রবাদী ধারণার প্রচার ও জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তার (শিব্বির আহমাদ) বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইসলামিক স্টেট (আইএস) অনুপ্রাণিত সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাসহ অর্থ সংগ্রহ করে সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সবুজবাগ থানার পূর্ব বাসাবো এলাকা থেকে শিব্বিরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসি ইউনিট। শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন। তিনি বলেন, পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট তাকে গ্রেফতার করেছে। তিনি নব্য জেএমবির শীর্ষস্থানীয় নেতা।
উপ-কমিশনার ওয়ালিদ হোসেন বলেন, গ্রেফতারকালে তার কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে একটি মুঠোফোন, পাঁচটি জিহাদি বই এবং একটি ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ বই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব ব্যাপার স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে ডিএমপির সবুজবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।
মহানগর পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, তার (শিব্বির আহমাদ) বিষয়ে আরো বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জানা গেছে, শিব্বির নব্য জেএমবি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত। শিব্বির শুরুতে সংগঠনের মিডিয়া উইংয়ে দায়িত্ব পালন করতেন। পরে আরো বিস্তারিত বলা হবে।
সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার শিব্বির আহমাদের নব্য জেএমবির একসময়ের আমির মুসার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মুসা মারা যাওয়ার পর তিনি সংগঠনে কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকেন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি পুনরায় অনলাইনের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হন। অনলাইনে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করে আইএস-অনুপ্রাণিত বিদেশি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করতেন।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, শিব্বির আহমাদ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র , ফ্রান্স, আফগানিস্তানসহ আরো কয়েকটি দেশের আইএস-অনুপ্রাণিত সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। দেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করা এবং নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদেশের বিভিন্ন নাগরিকের কাছ থেকে নানা উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া তিনি সিরিয়াফেরত বিভিন্ন দেশের কিছু বিদেশি নাগরিকের সঙ্গেও অর্থ লেনদেন করেছেন।