একাত্তরে স্বাধীনতার বিপক্ষে দাঁড়ানোর জন্য জামায়াতে ইসলামী ক্ষমা না চাওয়াকে কারণ দেখিয়ে আবদুল রাজ্জাকের দল ছাড়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা কামাল হোসেন।
মঙ্গলবার ঢাকার মতিঝিলে নিজের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে আসার পর তার কাছে ব্যারিস্টার রাজ্জাকের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়।
তখন কামাল বলেন, “ক্ষমা চাওয়ার বিষয়কে আমি স্বাগত জানাই।”
যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে এবং নিবন্ধন হারিয়ে চাপে থাকা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলে রাজ্জাক গত ১৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে দল ছাড়ার ঘোষণা দেন।
তার ওই ঘোষণায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তুমুল আলোচনা। চাপ থেকে বের হতে এটা জামায়াতের নতুন কৌশল ভাবছেন অনেকে। কেউ কেউ মনে করছেন, জামায়াত নতুন নামে দল গঠন করতে চাইছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছেন, তারা জামায়াতের কৌশল বুঝতে চাইছেন।
রাজ্জাক ক্ষমা চাওয়ার কথা বললেও জামায়াতের দলীয়ভাবে এখনও ক্ষমা না চাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, এতদিন পর দলটির ক্ষমা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ক্ষমা চাওয়াকে যথেষ্ট মনে করছেন কি না- এক সাংবাদিকের প্রশ্নে এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা কামাল বলেন, “আমি মনে করি না এটা যথেষ্ট।
“মাত্র একজন নেতা ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছেন। তাদের ক্ষমা চাওয়া হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে সব কিছু মাফ হয়ে যাবে না।”
গণফোরাম সভাপতি কামাল এবার বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন।
নিবন্ধন হারানো জামায়াতের ২২ জনকে এই নির্বাচনে বিএনপি তাদের ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার সুযোগ দেয়, যারা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ভোট চান।
জামায়াতকে ভোট দেওয়ার এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সমালোচনার মুখে কামাল বলেছিলেন, বিষয়টি বিএনপি তাকে না জানিয়েই করেছে।
একাদশ নির্বাচনের পর কামাল জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে বিএনপির উপর চাপ সৃষ্টির কথা বলেছিলেন।
তবে যে কর্মসূচি নিয়ে মঙ্গলবার ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিংকমিটির বৈঠক বসেছিল, তাতে ধানের শীষ প্রতীকের জামায়াত প্রার্থীদের অংশগ্রহণ থাকবে কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর মেলেনি ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কাছ থেকে।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ‘ভোট ডাকাতি’ করে জিতেছে বলে অভিযোগ তোলার পর অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে আগামী শুক্রবার গণশুনানি করছে ঐক্যফ্রন্ট, তা নিয়েই ছিল বৈঠক।
জামায়াতে ইসলামীর যে ২২ জন প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে তাদেরকে এই গণশুনানিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না-এ প্রশ্নে কামাল বলেন, “এগুলো আমার জানা নেই।”