কৌশলগত সম্পর্ককে আরও গভীর করছে রাশিয়া এবং চীন। সম্পর্কের নতুন দ্বার উন্মোচনসহ এক ‘নতুন যুগে’ প্রবেশে অঙ্গীকারবদ্ধ দুই দেশ। বেইজিং-মস্কোর সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনের মধ্যেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রেসিডেন্টরা। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের চীন সফরে যেন চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের এমন বন্ধুত্বে উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের মন্তব্যে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ‘ক্ষতি করার’ পরিকল্পনা করতে এক হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এমন অভিযোগ করেন তিনি। বিবিসি, দ্যা হিল।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি, আমি তাকে ভালোভাবে চিনি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন, তাকেও আমি ভালোভাবে চিনি। তারা এখন একসঙ্গে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন। যেখানেই তারা একত্রিত হন সেখানেই তারা ক্ষতি করেন।
কেননা, তারা এমনটাই ভাবেন, ক্ষতি করার কথা।’ ট্রাম্প ছাড়াও বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে মস্কো-বেইজিংয়ের চুক্তিসহ চলমান ইস্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। প্রতিরক্ষা শিল্পে দুই বন্ধু দেশের অংশীদারত্বের বিরুদ্ধে প্রয়োজন পড়লে ‘ব্যবস্থা’ নেয়া হবে বলেও সতর্ক করে মার্কিন প্রশাসন।
পুতিনের সফরের প্রথম দিনই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান উন্নতিসহ ‘সম্পর্কের নতুন যুগে’ প্রবেশের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের দুই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী। নিজেদের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধুত্বের প্রশংসা করেন নেতারা। বিশ্বে ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখতে মস্কো-বেইজিং একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন দুই ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট।
এদিন বাণিজ্যিক, প্রতিরক্ষাসহ তাইওয়ান নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা রয়েছে- এমন একটি যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন পুতিন ও শি। সফরের শেষ দিন চীনের ঐতিহাসিক শহর হারবিনে দুটি দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে পুতিনের। সেই সঙ্গে সেখানে একটি বরফ উৎসবেও যোগ দেবেন তিনি।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর মস্কোর গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হয়ে উঠেছে বেইজিং। ইউক্রেনে রুশ অভিযানের নিন্দা জানাতে বেইজিং শুধু অস্বীকৃতিই জানায়নি, বরং পশ্চিমাদের ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা মস্কোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে পুতিনের চীন সফরের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে পশ্চিমা বিশ্ব।