রাশিয়া থেকে সাগর পথে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য চুল্লিপাত্র ও জেনারেটর।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ ভারী যন্ত্র দুটি দেশে পৌঁছাবে বলে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাতা রুশ কোম্পানি রোসাটমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ভিভিইআর-১২০০ চুল্লিপাত্র (রিয়্যাক্টর ভেসেল) ও স্টিম জেনারেটর তৈরির কাজ শেষ হয় বলে রোসাটমের যন্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাটোমেনারগোম্যাশ জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বল হয়, ৩৩৩ দশমিক ৬ টন ওজনের চুল্লিপাত্র ও ৩৪০ টন ওজনের স্টিম জেনারেটর বিশেষ স্বয়ংক্রিয় পরিবহনে প্রথমে ভোলগোদোনস্কে সিমলিয়ানস্ক জলাধারের একটি জেটিতে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে এগুলো নভোরোসিয়েস্কে সিমলিয়ান্সক জলাধারের জেটি হয়ে কৃষ্ণসাগর ও সুয়েজখাল অতিক্রম করে চলতি বছরের শেষে বাংলাদেশে পৌঁছাবে।
অটোমেনারগোম্যাশের মহাপরিচালক আন্দ্রেই নিকিপেলোভ বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার মধ্যেও চুক্তি অনুযায়ী রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম চুল্লির সরঞ্জাম পাঠাতে সক্ষম হয়েছি। এসব জিনিস ১৪ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ অতিক্রম করে এই বছরের শেষের দিকে গন্তব্যে পৌঁছাবে।”
রোসাটম জানায়, ভিভিইআর-১২০০ চুল্লিবিশিষ্ট পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ শক্তিশালী। সে কারণে এ ধরনের পরমাণু কেন্দ্র থ্রি প্লাস জেনারেশনের শ্রেণিভুক্ত। নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপারেটরের সাহায্য ছাড়াই কাজ করতে পারে। এমনকি বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গেলেও এট সচাল থাকে।
রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের জন্য অটোমেনারগোম্যাশ ১৪ ধরনের সরঞ্জাম প্রস্তুত করবে। এর মধ্যে রয়েছে চুল্লিপাত্র, স্টিম জেনারেটরের যন্ত্রাংশ, প্রধান সঞ্চালন পাইপলাইন, চাপ কমানোর যন্ত্র, জরুরি শীতলীকরণ ব্যবস্থা ও নিষ্ক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রোসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশন।
কাজ শুরুর ৬৮ মাসের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল স্থাপনা নির্মাণের কথা রয়েছে রাশিয়ার কোম্পানি অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের।
সরকার আশা করছে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেওয়া সম্ভব হবে। পরের বছর চালু হবে সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট।