রাসেল পেলেন ৫ লাখ, বাকি টাকা দিতে এক মাস পেল গ্রিনলাইন

 

rasel-5cadd7b511728

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণের ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ৫ লাখ টাকা দিয়েছে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ। বাকি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধে গ্রিনলাইনের মালিককে এক মাস সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষকে টাকা পরিশোধে এ সময় দেন।

রিট আবেদনকারীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা ও আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি। গ্রিনলাইন পরিবহনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অজি উল্লাহ ও আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী।

রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণের ৫০ লাখ টাকা পরিশোধে হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে এক মাস সময় প্রয়োজন বলে এদিন সকালে আদালতকে অবহিত করেন গ্রিনলাইনের আইনজীবী অজি উল্লাহ। এ অবস্থায় আদেশের কিছু বাস্তবায়ন করে বিকেলে তাদের আবার আদালতে আসতে বলেন বিচারক।

পরে বিকেলে আদালত কক্ষেই রাসেলকে গ্রিনলাইনের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। এরপর আদালত বাকি টাকা পরিশোধে গ্রিনলাইনের মালিককে এক মাস সময় দেন।

গত বছরের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চাপায় রাসেলের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে গ্রিনলাইনের বাস ও এর চালককে পুলিশ আটক করে। পুলিশ তখন জানিয়েছিল, রাসেল একটি প্রাইভেটকার চালাচ্ছিলেন। তার গাড়িতে বাসটি ধাক্কা দিলে প্রতিবাদ জানাতে গাড়ি থেকে নেমে বাসের সামনে দাড়িয়েছিলেন রাসেল। কিন্ত বাসটি তার । ওপর দিয়েই চালিয়ে দেন চালক। এতে রাসেলের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রাসেল সরকার রাজধানীর আদাবর এলাকায় স্থানীয় একটি ‘রেন্ট-এ-কার’ প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেটকার চালাতেন। এ ঘটনার পর রাসেলের পক্ষে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেন সংরক্ষিত আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। ওই রিটে গত বছরের ১৪ মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ মার্চ পা হারানো রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাসেলের কৃত্রিম বাম পা লাগাতে এবং তার অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে, সেই খরচও গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষকে বহন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ আপিল করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। এতে ৩ এপ্রিলের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করে ৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করায় ৪ এপ্রিল গ্রিনলাইন পরিবহনের ম্যানেজারকে তলব করেন হাইকোর্ট। ওইদিন গ্রিনলাইনের ম্যানেজার জানান, তাদের মালিক বিদেশে অবস্থান করছেন, ৯ এপ্রিল দেশে ফিরবেন। পরে আদালত ১০ এপ্রিলের মধ্যে টাকা পরিশোধের আদেশ দেন।

Pin It