কেন উইলিয়ামসনের লড়াই শেষ হয়ে গেছে বেশ আগেই। তখন লড়াই করছিলেন রস টেইলর। ভারতের দুর্দান্ত বোলিং সামলে চেষ্টা করছিলেন দলের রান যতটা সম্ভব বাড়াতে। কিন্তু এ দিন আর দেখা হলো না পরিণতি। বৃষ্টিতে থমকে যাওয়া ম্যাচ গড়াল রিজার্ভ ডেতে।
ম্যানচেস্টারে মঙ্গলবার বিশ্বকাপের প্রথম সেমি-ফাইনালে নিউ জিল্যান্ড ৪৬.১ ওভারে ৫ উইকেটে ২১১ রান তোলার পর নামে বৃষ্টি। এরপর আর খেলা শুরু হতে পারেনি। নিয়ম অনুযায়ী বুধবার রিজার্ভ ডেতে খেলা শুরু হবে এখান থেকেই।
বৃষ্টির শঙ্কা নিয়েই শুরু হয়েছিল দিন। টসের সময়ও আকাশ ছিল মেঘলা। উইকেট নতুন। পরের দিকে বৃষ্টির শঙ্কা নিয়েও টস জিতে ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জে নামে নিউ জিল্যান্ড। তবে সেই চ্যালেঞ্জ জয় করার মতো ব্যাটিং তারা করতে পারেনি।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এবারের বিশ্বকাপের ম্যাচগুলি ছিল বেশ রান প্রসবা। সেমি-ফাইনালের উইকেট যদিও মনে হয়ে একটু মন্থর। এরপরও ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপকে চ্যালেঞ্জ জানাতে এই শেষ কয়েক ওভারে ঝড় তুলতে হবে কিউইদের, এরপর বোলিংও হতে হবে দুর্দান্ত।
বিশ্বকাপে এবার এই মাঠে আগের সব ম্যাচই জিতেছে আগে ব্যাট করা দল। তবে দিনের প্রেক্ষাপটে নিউ জিল্যান্ডের সিদ্ধান্ত জাগাল প্রশ্ন। বিশেষ করে,শুরুর সহায়ক কন্ডিশনে ভারতের টপ অর্ডারে ছোবল মারার সুযোগ যেখানে ছিল।
আগে ব্যাট করে বড় স্কোর করে ভারতকে চাপে ফেলার কাজটিও করতে পারেনি তারা। বরং শুরুতে ভুগেছে তারা জাসপ্রিত বুমরাহ ও ভুবনেশ্বর কুমারের আগুনে বোলিংয়ে।
নিউ জিল্যান্ডের ভোগান্তির শুরু ম্যাচের প্রথম বল থেকেই। ভুবনেশ্বরের বলে জোরালো আবেদনে বেঁচে যান মার্টিন গাপটিল। ভারত হারায় রিভিউ। তবে ভারতীয় বোলাররা হারায়নি ছন্দ। বুমরাহ ও ভুবনেশ্বরের দুর্দান্ত প্রথম স্পেলে হাঁসফাঁস করতে থাকে কিউই ব্যাটসম্যানেরা।
প্রথম ৩ ওভারে রান ছিল ১। চতুর্থ ওভারে বুমরাহ বলে বিরাট কোহলির দারুণ ক্যাচে ফেরেন গাপটিল। প্রথম ম্যাচের পর থেকে নিজেকে হারিয়ে খোঁজা অভিজ্ঞ ওপেনার এই ম্যাচেও করেছেন ১৪ বলে ১ রান।
৭ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের রান ছিল ১০। বুমরাহর বলে হেনরি নিকোলসের ড্রাইভে অষ্টম ওভারে আসে ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি।
নতুন বলের দুই বোলারের স্পেল শেষে একটু স্বস্তি পায় নিউ জিল্যান্ড। নিকোলস ও উইলিয়ামসন আস্তে আস্তে রান বাড়াতে থাকেন। গড়ে ওঠে জুটি।
৮৯ বলে দুজনের ৬৮ রানের জুটি ভাঙে রবীন্দ্র জাদেজার দারুণ ডেলিভারিতে। ২৮ রান করে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হন নিকোলস।
টেইলরের সঙ্গে মিলে এরপর উইলিয়ামসন গড়েছেন আরেকটি জুটি। তবে ভারতের আঁটসাঁট বোলিং ও উইকেটের মন্থরতা মিলিয়ে গতি খুব বাড়াতে পারছিলেন না তারা। ১৪তম ওভারের পর টানা ১৩ ওভারে আসেনি কোনো বাউন্ডারি।
১০২ বলে ৬৫ রানের জুটি শেষ হয় উইলিয়ামসনের বিদায়ে। ৯৫ বলে ৬৭ করে কিউই অধিনায়ক ক্যাচ দেন যুজবেন্দ্র চেহেলের থমকে আসা একটি বলে।
এরপর লড়াই চালিয়ে গেছেন টেইলর। জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমরা পারেননি লম্বা সময় সঙ্গ দিতে। ইনিংসের একমাত্র ছক্কায় চেহেলকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে টেইলর ফিফটি স্পর্শ করেন ৭৩ বলে।
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধের সময় টেইলরের রান ছিল ৮৫ বলে ৬৭। রানটা আরও বাড়াতে কিউইদের ভরসা তিনিই। ভারতও জানে, টেইলরকে দ্রুত ফেরাতে পারলে নিউ জিল্যান্ড থমকে যাবে অল্পতেই। ম্যাচে তাই লড়াইয়ের রসদ আছে এখনও, যদি না আবার বাগড়া দেয় বৃষ্টি!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ৪৬.১ ওভারে ২১১/৫ (গাপটিল ১, নিকোলস ২৮, উইলিয়ামসন ৬৭, টেইলর ৬৭*, নিশাম ১২, ডি গ্র্যান্ডহোম ১৬, ল্যাথাম ৩*; ভুবনেশ্বর ৮.১-১-৩০-১, বুমরাহ ৮-১-২৫-১, পান্ডিয়া ১০-০-৫৫-১, জাদেজা ১০-০-৩৪-১, চেহেল ১০-০-৬৩-১)।