নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণে ইতালিতে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যুর পর দেশটির সবচেয়ে আক্রান্ত এলাকা লমবার্দিতে নতুন করে আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
শনিবার রাতে ঘোষিত এসব পদক্ষেপে বাড়ির বাইরে সব ধরনের খেলাধুলা ও ব্যায়াম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, পাশাপাশি ভেন্ডিং মেশিনের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
শনিবার দেশটিতে ভাইরাসটির সংক্রমণে সৃষ্ট রোগ কভিড-১৯ এ প্রায় ৮০০ রোগীর মৃত্যুর পর কর্তৃপক্ষ নতুন এসব পদক্ষেপ নিলো।
২১ ফেব্রুয়ারি ইতালিতে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে গত এক মাসে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৪ হাজার ৮২৫ জনে দাঁড়িয়েছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় লমবার্দিতে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৯৫ জন।
‘জরুরি’ সাপ্লাই চেইন ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল, সড়ক ও রেলপথ বাদে সব ধরনের নির্মাণ কাজও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
খোলা আকাশের নিচে বসা সাপ্তাহিক মার্কেটগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে।
লমবার্দি অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট আত্তিলিয়ো ফোনতানা এক বিবৃতিতে নতুন এসব বিধিনিষেধের কথা ঘোষণা করেন।
৮ মার্চ থেকে লমবার্দি লকডাউন অবস্থায় আছে এবং এর ফলাফল এখানেই প্রথম দৃষ্টিগোচর হবে বলে আশা করেছিল ইতালি সরকার।
শনিবার ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে দেশজুড়ে ‘জরুরি নয়’ এমন সব ধরনের ব্যবসা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে কোন ধরনের ব্যবসাকে জরুরি বলে বিবেচনা করা হবে তিনি তা পরিষ্কার করেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সুপারমার্কেট, ফার্মেসি, পোস্ট অফিস ও ব্যাংক খোলা থাকবে এবং গণপরিবহনও সচল থাকবে।
জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, “আমরা দেশের উৎপাদন ইঞ্জিনের গতি ধীর করবো কিন্তু বন্ধ করবো না।”
চলমান এ পরিস্থিতিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালির জন্য ‘সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।
একের পর এক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও দেশটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সিস্টেমস সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (সিএসএসই) দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ইতালিতে কভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ হাজার ৫৭৮ জন ও মৃতের সংখ্যা ৪৮২৫ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আক্রান্তদের মধ্যে ৬০৭২ জন চিকিৎসার পর রোগমুক্ত হয়েছেন।
সিএসএসইয়ের তথ্যানুযায়ী, রোববার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ২৭৮ জন ও মৃতের সংখ্যা ১৩০৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে আর আক্রান্তদের মধ্যে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সংখ্যা ৯২ হাজার ৩৭৩ জন হয়েছে।