সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ ও নীতি সহায়তার কারণে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রেমিটেন্স প্রবাহে ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সামনের দিনগুলোতেও রেমিটেন্স প্রবাহ ও রফতানি আয়ের ইতিবাচক এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট সময়ে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। রফতানি আয়ের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। আশা করি আগামী দিনেও ইতিবাচক এই ধারা চলতে থাকবে।
আজ বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির সভাশেষে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট দুই মাসে ৪৫৬ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। একক মাস হিসেবে আগস্টে রেমিটেন্স এসেছে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।
রেমিটেন্স প্রবাহের উচ্চ প্রবৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি রেমিটেন্স প্রবাহের বিষয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করে দেখেছেন রেমিটেন্সের বড় একটি অংশ আসে অবৈধ চ্যানেলে। তিনি বলেন, কিন্তু আমরা চাই,প্রবাসীরা যেন বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠান। এ কারণে রেমিটেন্স প্রবাহের ওপর ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা করা হয়, যার ভালো ফল এখন পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি জানান, গত এক বছরে রেমিটেন্স পাঠানোর বিষয়ে বা প্রেরিত রেমিটেন্সের উৎস সম্পর্কে কেউ কোন প্রশ্ন তুলেনি।
তিনি আরও বলেন, আমি সবসময় একটি বিষয় বিশ্বাস করি, সেটা হলো আমাদের সম্পদ আছে এবং সেগুলোকে ব্যবহার করতে হবে। আমাদের অভ্যন্তরীণ সব সম্পদকে অর্থনীতির মূলধারায় আনতে হবে। কর্মোদ্যোগ অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে এবং তার বহু ধরনের সুফল পাওয়া যায়।’
জুলাই-আগস্ট সময়ে রেমিটেন্স প্রবাহের ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে ‘অভূতপূর্ব’ অভিহিত করে মুস্তফা কামাল বলেন, এটা অবিশ্বাস্য ঘটনা। তিনি বলেন,‘ বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের সঙ্গে তুলনায় এবারের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ৫০ শতাংশ বেশি রেমিটেন্স এসেছে, যা অবিশ্বাস্য ঘটনা।
তিনি মনে করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা বেশি বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে যেমন বেগবান করছেন, পাশাপাশি তাদের পরিবারের আর্থিকভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করছেন।
প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোর আহবান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এতে প্রবাসীরা দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হবেন। তিনি বেশি বেশি রেমিটেন্স প্রেরণ করায় প্রবাসীদেরকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে গভীর ধন্যবাদ জানান।
কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদান প্যাকেজের ঋণ বিতরণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকার চাই এই ঋণের অর্থ স্বচ্ছতার সাথে বিতরণ হোক, যেন কোন ধরনের অনিয়ম না হয়। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নিজে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম তদারকি করছেন, যাতে ঋণ পাওয়ার উপযোগি কোন ব্যক্তি বা ব্যবসায়ী যেন বাদ না পড়েন।