রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিএনপিকে ‘কোনো রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
বুধবার ধানমণ্ডির এক কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় এ কথা বলেন তিনি।
নানক বলেন, “১০ লাখ রোহিঙ্গাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই দিন যদি আশ্রয় না দিত, তাহলে এই মানুষগুলোর আত্মাহুতি দেওয়ার মত অবস্থা হয়েছিল সেদিন। বিশ্বমানবতার নেত্রী শেখ হাসিনা এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বমানবতার ইতিহাসের এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।”
রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট থেকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে রোহিঙ্গারা; এই সংখ্যা কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখ ছাড়ায়। আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
সেজন্য সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নতজানু পররাষ্ট্র নীতির’ কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আটকে আছে।
এর জবাবে নানক বলেন, “ইনশাআল্লাহ শেখ হাসিনার চৌকস, বিচক্ষণ পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো হবে। এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে কোনো রাজনীতি করার সুযোগ মির্জা ফকরুল সাহেব আপনাদেরকে দেওয়া হবে না।”
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “যারা বলেন, গুটিকয়েক বিপথগামী সেনা সদস্য ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, তারাই মূলত ২০০৪ সালের (২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা) হত্যাকাণ্ডের মূল ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। যারা ১৯৭১ সালে পরাজিত হয়েছিল, তারা প্রতিশোধ নেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল।”
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তীতে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার হোতাদের যাবতীয় তথ্য উদঘাটন করে জনসস্মুখে উন্মেচন করার দাবি জানান নানক।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম সভায় বলেন, “করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই একটি চক্র আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা গণতান্ত্রিক শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ শক্তি, শেখ হাসিনাকে নিয়ে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে। তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।”
মহামারীর মধ্যে মানুষের সহায়তায় আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে নেতাকর্মীদের আরও সংঘবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এই সভায় অংশ নেন।