আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অফিস-আদালত ও গণ পরিবহন চালুসহ লকডাউন শিথিলের সময় সরকারের দেয়া সকল শর্ত কঠোরভাবে মেনে চলতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে সরকার সাধারণ ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পালনীয় কিছু শর্ত থাকছে যেমন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জরুরি কিছু নির্দেশনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। দেশবাসীকে বিশেষ করে সরকারি-বেসরকারি খাতসহ সকলকে শর্তাবলী কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি নিজেদের স্বার্থে।’
ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার তার সংসদ ভবনস্থ সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এই আহবান জানান।
নিজেদের স্বার্থে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের দেয়া এ ছাড়ে, ফ্রি স্টাইলে চলাচল করলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ক্ষতিগ্রস্ত দশটি দেশের তালিকায় থেকেও অর্থনীতির স্বার্থে লকডাউন শিথিল করেছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা বেশ খারাপ। তারপরও তারা অর্থনৈতিক কারণে লকডাউন শিথিল করেছে। জীবন ও জীবিকার মাঝে ভারসাম্য তৈরি, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, সামাজিক শৃঙ্খলা ও সুরক্ষার স্বার্থে এই লক ডাউন শিথিল করা দরকার। সরকার এজন্যই লকডাউন শিথিল করেছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে জীবন-জীবিকার মাঝে সাযুজ্যবিধানের যে প্রয়াস চলছে তার থেকে বাংলাদেশে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তার সাহসী ও মানবিক নেতৃত্বে আমরা ইতোপূর্বে অনেক সংকট থেকে উত্তরণ লাভ করেছি। ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসেবে তার দক্ষতার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। আপনারা মনোবল না হারিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রাখুন। সরকারকে সহযোগিতা করুন।
করোনা সংকটকালে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনাকারীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, এখন আমাদের উচিত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অদৃশ্য শত্রু করোনা মোকাবিলা করা। করোনা আমাদের কারও বন্ধু নয়, কাজেই এ সংকটকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার কৌশল অবলম্বন হবে আত্মঘাতী।
গণপরিবহন চালু প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সরকার গণপরিবহন চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে বিআরটিএসহ বসে আলাপ-আলোচনা করে একটি পরিকল্পনা গ্রহণের অনুরোধ করছি। গণপরিবহন পরিচালনায় যাত্রী, চালক ও শ্রমিকদের সুরক্ষায় সুনির্দিষ্টভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে। যাত্রী-মালিক শ্রমিক সকলের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। মনে রাখতে হবে করোনার সংক্রমণের বিস্তার যেন না ঘটে এবং সংকটকে আরও ঘনীভূত না করে। জনস্বার্থে সরকারের দেয়া এ ছাড় ফ্রি-স্টাইলে অপপ্রয়োগ করলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গণপরিবহন চালু প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, গণপরিবহন চালুতে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি সামনে এসে যায়। বেড়ে যায় উদ্বেগ। পরিবহন চালক শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ট্রাফিক আইনও যথাযথভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি। করোনার মৃত্যুর পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনায় যাতে মৃত্যুর মিছিল দেখতে না হয় এজন্য সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।